সারাবাংলা
আওয়ামী লীগ নেতাকে থানা থেকে ছাড়াতে গিয়ে বিএনপির দু’পক্ষের হাতাহাতি

রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় জুলাই-আগস্টের আন্দোলনকারীদের উপর হামলার মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালামকে ছাড়িয়ে নিতে গিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, আসামি নিজে জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আলামিন সরকার টিটুকে লাথি মেরেছেন।
রোববার (১৬ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে বোয়ালিয়া মডেল থানার ভিতরে এ হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। হাতাহাতির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
জানা গেছে, ৫ আগস্টের ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলার এজাহারভুক্ত ৬৫ নম্বর আসামি আবুল কালাম। তিনি এক সময় পবা উপজেলার পারিলায় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরবর্তীতে আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসলে তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত হয়ে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নেন। আবুল কালাম রাজশাহী ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি এবং রাজশাহী ইউরিয়া সার ডিলার সমিতির সভাপতি ছিলেন।
কৃষকদলের রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আলামিন সরকার টিটু অভিযোগে বলেন, আবুল কালাম গতবছরের ৫ আগস্টের মামলার আসামি। আওয়ামী সরকারের দোসর জানার পরেও বিএনপির কিছু নামধারী নেতা থানা থেকে এই আসামি ছাড়িয়ে নিতে তদবির করতে আসেন। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।
তিনি বলেন, আমরা প্রতিবাদ করার কারণে থানার ভিতরে ওসিসহ সকলের সামনে আমাকে আবুল কালাম লাথি মারেন এবং শাহ মখদুম থানা বিএনপির সাবেক আহবায়ক জিল্লুর রহমানসহ রাজশাহী মহানগর বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের কিছু নামধারী নেতাকর্মীরা আমাদের লাঞ্ছিত করেন।
তবে শাহ মখদুম থানা বিএনপির সাবেক আহবায়ক জিল্লুর রহমান বলেন, আবুল কালাম আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী হওয়ায় দেখা করতে গিয়েছিলাম। আওয়ামী শাসনামলে আবুল কালামকে ইউরিয়া সার ডিলার সমিতির সভাপতি থেকে বের করে দেওয়া হয়। ২০২৪ সালে মেয়র লিটন দ্বারা মামলার শিকার হন।
তিনি বলেন, আবুল কালাম একজন সম্মানিত ব্যক্তি, তিনি বিএনপির রাজনীতি করতেন। ব্যবসায়িক স্বার্থে মেয়র লিটনসহ বিভিন্ন আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে চলতে হতো।
জিল্লুর অভিযোগ করেন, মূলত ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান সমিতি দখল করতেই আবুল কালামকে মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আসামি আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করার পর মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা থানা প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন। প্রায় ৫০ জন নেতাকর্মী থানা প্রাঙ্গণে জড়ো হন। সেখানে তারা একে অপরের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু করেন।
বোয়লিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাক আহমেদ বলেন, বিএনপির বেশ কিছু নেতা আবুল কালামের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। তবে কেউ আসামিকে ছাড়িয়ে নিতে তদবির করেননি। এজহারনামীয় আসামি হওয়ায় আবুল কালামকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় থানার মধ্যে বিএনপি নেতাদের মধ্যে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে বিবদমান পক্ষের মধ্যকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।