সারাবাংলা
ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ভাইরাল, মুচলেকা নিয়ে আটক ছাত্রলীগ কর্মীকে ছাড়ল পুলিশ

ভোলার চরফ্যাসনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক বছর আগে এক তরুণীকে ধর্ষণ করে চার তরুণ। সে সময় ধারণ করা ভিডিও শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় তাদেরই একজন। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে পুলিশ একজনকে আটক করে। কিন্তু পরে টাকার বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ঢালচর ইউনিয়নের নিবির ওই তরুণীকে একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে গেলে এলাকার শরীফ, মনির ও আকতার পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের আটক করে। পরে ভয় দেখিয়ে তারা চারজন তরুণীকে ধর্ষণ করে। শনিবার শরীফের ফেসবুক আইডি থেকে সেই ঘটনার ভিডিও ছড়ানো হয়। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে শরীফকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অভিযুক্ত অন্যরা এখন এলাকা ছাড়া।
শরীফের বাবা নূরে আলম বলেন, ‘একটি ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করার কারণে শরীফকে আটক করে পুলিশ। আইডি ঘেঁটে ভিডিওটি না পেয়ে পরে তাকে ছেড়ে দেয়।’
স্থানীয় কয়েকজন জানান, অভিযুক্ত শরীফ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য এবং তার বাবা নূরে আলম ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সদস্য। নিবিরের বাবা এলাহী মেম্বার ওই ইউনিয়ন যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি। আর নিবির ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। মনির ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক। তার বাবা গনি মাঝি একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য। আকতার ছাত্রলীগের সদস্য। তিনি ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিনের ছেলে। ঢালচর ফাঁড়ির পুলিশ মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে শরীফকে ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
এ বিষয়ে ঢালচর ফাঁড়ি ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি ভোলা সদরে আছি। তাই কী হয়েছে বলতে পারছি না। ফাঁড়িতে এসআই সোহেল রয়েছেন। তাঁর কাছ থেকে জেনে পরে জানাতে পারব।’
ঢালচর ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো. সোহেল বলেন, ‘শরীফের আইডি ঘেঁটে কোনো ভিডিও পাওয়া যায়নি। তবে শরীফের আইডি থেকেই ভিডিওটি ছড়িয়েছে। তাঁর যথেষ্ট প্রমাণ আছে। পড়ে হয়তো ভিডিওটি মুছে ফেলা হয়েছে।’ তথ্য যাচাই না করে কেন শরীফকে ছেড়ে দেওয়া হলো- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ওসি স্যারের নির্দেশে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’
দক্ষিণ আইচা থানার ওসি এরশাদুল হক ভূইয়া বলেন, ‘ভিডিওটি এক বছর আগের জানতে পেরেছি। ওই তরুণীর কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। আটক তরুণের ফেসবুকেও ভিডিওটি পাওয়া যায়নি। তাই মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’ এ ধরনের অপরাধে কাউকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়া যায় কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সহকারী পুলিশ সুপারের (চরফ্যাসন সার্কেল) সঙ্গে কথা বলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী হাসানের বক্তব্য জানা যায়নি।