জাতীয়

অন্তর্বর্তী সরকার বিনিয়োগে আস্থা ফেরাতে পারেনি: সিপিডি

অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে বিনিয়োগের জন্য আস্থার পরিবেশ ফিরে আসেনি। আগেও অনিশ্চয়তা ছিল, এখনো চলমান।
অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকারে বিনিয়োগকারীরা আস্থা আনতে পারছে না বলে মনে করছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
বুধবার (২৯ জানুয়ারী) ধানমন্ডিতে সিপিডির কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০২৪-২৫: সংকটময় সময়ে প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সংলাপে একথা বলা হয়।
সংলাপে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রাজনৈতিক সংস্কার ও অর্থনৈতিক সংস্কারের মধে কোনো বৈপরীত্য নেই। দুটোই করতে হবে। রাজনৈতিক সংস্কার পার্টিগুলোর ভেতর থেকে করতে হবে। নির্বাচনী সংস্কার দিয়ে রাজনৈতিক সংস্কার হবে না। দলের ভেতরে সংস্কারের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হতে হবে। অর্থনৈতিক সংস্কার করতে হলেও একটি সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তবে এখন দ্রুত যে কাজটি করতে হবে, একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। সেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পথে যদি সমঝোতার মধ্য দিয়ে আসতে পারে তাহলে যে সংস্কার প্রস্তাবগুলো করা হচ্ছে, সেগুলো চলমান রাখবে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সুযোগ এসেছিল কর ফাঁকি রোধ, ঢালাও কর অব্যাহতি কমিয়ে আনা ও পরোক্ষ করের মধ্য থেকে বের হয়ে এসা। এটা করতে পারলে দেশে আয় বৈষম্য, সম্পদ বৈষম্য ও ভোগ বৈষম্যের যে কথা বলি, সেটা কমতো। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সেই কাজটি করার সময় ছিল। কিন্তু এ সরকার সেটা করতে পারছে না।
এলএনজির আমদানিতে যুক্তরাষ্টের সাথে চুক্তির বিষয়ে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যা হয়েছে, সেটা ননবাইন্ডিং সমঝোতা স্মারক। যেটা আগামী সরকার ইচ্ছা করলে চুক্তি করতে পারে। আবার ইচ্ছা করলে নাও করতে পারে।
রাজনৈতিক অস্থিরতা বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে বিনিয়োগ হচ্ছে না উল্লেখ করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার স্বল্পকালীন। এ সরকার জনগণের ম্যান্ডেটহীন ট্রানজ্যাকশনাল সরকার। বিনিয়োগের জন্য স্থিতিশীলতা প্রয়োজন, যা এই সরকারের নেই।
তেলের দাম লিটার প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা কমানো সম্ভব বলে জানান সিপিডির গবেষণা ফেলো হেলেন মাশিয়াত প্রিয়তী। তিনি বলেন, তেলের মূল্য নির্ধারণে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) মেথোডলজি ভুল। কারণ সেখানে বেশ কিছু কম্পোনেন্ট আছে, যেখানে মার্জিন ধরা হচ্ছে ইউটিলিটির ওপরে। বিশ্বের কোনো দেশে ইউটিলিটির ওপর মার্জিন ধরা হয় না। সেখানে ৫ শতাংশ মার্জিন ধরা হচ্ছে। এটা একটি কারণ। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, বিপিসির যে মেথডোলজি সেখানে সাতটি স্তরে ভ্যাট-ট্যাক্স রাখা আছে। আর বিআরসির তিনটা স্তরে ভ্যাট-ট্যাক্স ধরা হয়েছে। এটাও ঠিক না। আর তৃতীয়টি হলো, ডলারের যে বিনিময় হার, বিপিসির ক্ষেত্রে পরিষ্কার না। বিপিসি কোন ব্যাংকের ডলারের বিনিময় হার ব্যবহার করছে, কীভাবে অ্যাডজাস্ট করছে, এটা পরিষ্কার করে বলেনি। বিপিসির মেথোডলজির ভুলের কারণে দাম কমছে না। যদি বিপিসির মেথোডলজিতে যায় তাহলেও ১০ টাকা দাম কমবে, আমাদের মেথোডলজিতে ১৫ টাকা কমানো সম্ভব।

আরও দেখুন

এ বিষয়ের আরও সংবাদ

Close