আন্তর্জাতিক
গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে আজ, নেতানিয়াহুর হুঁশিয়ারি
দীর্ঘ ১৫ মাসের ইসরায়েলি আগ্রাসনে মৃত্যুপুরীতে পরিণত গাজায় অবশেষে কার্যকর হতে যাচ্ছে যুদ্ধবিরতি। আজ স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩০ মিনিট থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। খবর আল-মায়েদিনের।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার এক পোস্টে বলেছেন, ‘চুক্তির পক্ষগুলো এবং মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে সমন্বয়ের পর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি রবিবার (১৯ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে।’
গাজাবাসীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “সতর্ক থাকুন, সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করুন এবং কেবল সরকারি সূত্র থেকে পাওয়া নির্দেশনার অপেক্ষা করুন।”
এদিকে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গাজায় বহু প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে ভয়াবহ এক হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেন, “এই যুদ্ধবিরতি সাময়িক এবং গাজায় পুনরায় হামলা চালানোর অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে। আর এতে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন রয়েছে।”
নেতানিয়াহু গত ১৫ মাসে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের সাফল্যের কথাও তুলে ধরেন- যার মধ্যে হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের হত্যাকাণ্ডও অন্তর্ভুক্ত।
নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দিয়েছি। হামাস এখন সম্পূর্ণ একা।”
এই বক্তৃতার আগে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, “জিম্মিদের মধ্যে কাদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে, হামাসের সেই তালিকা আমাদের হাতে না আসা পর্যন্ত ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি করবে না। চুক্তির লঙ্ঘন সহ্য করবে না ইসরায়েল।”
ইসরায়েলের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে যে ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে, তার একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা এখন পর্যন্ত তালিকার বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলেননি। ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষগুলো বলছে, রবিবার যে তিন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে, তাদের নাম এখনো পাননি তারা।
যুদ্ধবিরতির অন্যতম মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গাজার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে আটটা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে। যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে ১ হাজার ৮৯০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি বন্দীকে ছেড়ে দেবে ইসরায়েল।
যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের ১৬তম দিনে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এই ধাপে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ওপর জোর দেওয়া হবে। অবশ্য, দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতির শর্তগুলো এখনো স্পষ্ট নয়। তবে, এই ধাপে অন্য সব জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিনিময়ে আরও ফিলিস্তিনিকে কারাগার ও বন্দিশালা থেকে ছেড়ে দেবে ইসরায়েল।