ডাহুকের ডাক আজ আর শোনা যায় না আগের মতো,
ফিরে যদি যাই সেই ছোট বেলায়- অবাক বিস্ময় হয়ে ভাবি
কোথা গেল মোর সেই ছোট্ট বেলার বাড়ির পাশের ঝোপঝাড়,
ছোট ছোট বনবাদাড় গুলো।
স্মৃতিময় কল্পলোকের মতো শিকারে বেড়াতাম কয়েক বন্ধু মিলে
মাটির গুলি আর গুলতি নিয়ে, রাজকুমার রূপে ঘোড়ায় চড়ে
সেই শিহরিত বনবাদাড়ে।
নাম না জানা কত পাখি এ ডাল ও ডাল ঘুরে বেড়াতো,
নিশানা নিয়ে কতটা কসরত- অবশেষে বিফল,
একবেলা শিকারে হয়তোবা জুটেছে কপালে একটা টুনটুনি।
নাম না জানা পাখির বিবরণ শুনে বাবা জানাতেন-
এটা বুলবুলি, এটা বৌ কথা কও, ওটা চোখ গেল পাখি, এটা মৌটুসী।
এ ছাড়াও অনেক নাম আজ পড়ছে মনে- যা শিখেছি বাবার মুখে,
আজো মনের মাঝে আছে গাঁথা।
সেই পাখিগুলো- ফিঙ্গে, ঘুঘু, দোয়েল আর কত কি!
মনে পরে আজো পাটিবেত বনে জাল পেতে ডাহুক শিকারের কথা.
শিকারী ঘুঘু দিয়ে খাঁচায় ফাঁদ পেতে বাঁশের নলগুলো জোড়া দিয়ে
উচু মগডালে বেধে রাখা, পোষা ঘুঘুটির ডাক শুনে
বুনো ঘুঘুর সেই ফাঁদে ধরা দেয়া।
কি যে মজা ছিল সেসব শিকারে যায় কি আজ ভাবা!
আলো-আধাঁরিতে সেসব বনের রূপ যেত বহুগুন বেড়ে।
বটের কচি পাতা দিয়ে বানাতাম বাঁশী, বাজাতে বাজাতে ফিরতাম ঘরে-
সে এক মজার অনুভূতি।
বোশেখ মাসে খুজে বেড়াতাম শালিক ছানা কোথা আছে,
নারিকেল গাছে ফোঁকল বানাতো কাঠঠোকরা পাখিরা,
সেখানে আমরা খুঁজে পেতাম কাঙ্ক্ষিত শালিক ছানা।
ফড়িং খুঁজে আনতাম সেই শালিক ছানার জন্য।
আজ যতবার বাড়ি যাই- মনে হয় অজানা পরিবেশ, অচেনা সেই আশ-পাশ।
সেই বনবাদাড় নেই, ঝোপঝাড় গুলো হয়েছে বিলীন,
নতুন বসতি করেছে দখল- প্রকৃতি বিলিন করে।
জায়গা ছেড়ে কোথা গিয়েছে তারা- খুঁজে ফিরি আজ আনমনে…