এক শরৎ অপরাহ্ণে কোন এক মরা নদীর বাঁকে,
বসে আছি উদাস নয়ন মেলে-
এক বটবৃক্ষের মূলে।
প্রকৃতি আজ দোলা দিয়ে যায় মনে-
হিজল-তমালের বন ছিল যে পাশে,
তারই ছায়ায় ঘুঘু ডাকে একমনে
মরা নদীর তীরে-
কাশবনে আজ লাগলো সাদা প্রলেপ
দোল খেয়ে যায় আপন বলয় মাঝে,
বালুকা বেলায় পড়ছে এসে রবির আলো
চিকচিক করে সেই আলোতে বালুগুলো।
নদীর পানি হাওয়ার তোড়ে টল-মল
মনে চলে যায় কল্পলোকে সুদূর পরবাসে,
সেই মরা নদীর তীরে-
একপায়ে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে বক পাখি
কখন শিকার করবে মাছ তারই অপেক্ষাতে,
শালিকের দল করছে জলকেলি
মুখরিত চারিদিক তাদের সে উৎসবে।
রাখাল ছেলে গরুর পাল নিয়ে সেই চরে
করছে গোসল মহা আনন্দে,
সেই মরা নদীর বাঁকে-
দূর আকাশে দেখি উড়ছে শঙ্খচিল
আকাশে আজ ভেসে যায় শুভ্র মেঘমালা,
এক অপরূপ সৌন্দর্য্য যেন করছে খেলা
মাটি, নদীর, আকাশ বাতাসের মেলা।
মাটির সোঁদা গন্ধ আর নাম না জানা ফুল
নাকে এসে লাগছে, করে মন যেন ব্যাকুল,
গুইসাপ, বেজিগুলো দলবেধে করে খেলা
সন্তর্পণে কেহ যেন না দেখে তাদের মেলা,
হিজল বনের ছায়ায় ছায়ায় করে খেলা
কাঠবিড়ালির নগ্ন পায়ের সতর্ক আনাগোনা
হোগলা বনে মিষ্টি সুরে ডেকে যায় একটানা
ডাহুকের সেই মিষ্টি সুর কানে এসে বাজে।
বটমূলে বসে আমি অবাক হয়ে আজ ভাবি
এ ধরণির সুখের আধার রয়েছে যে এখানে,
গাছগাছালি, পশুপাখি, নিরব প্রকৃতি
শত দুঃখ মুছে দেয় শান্তির আধার এই
মরা নদীর বাঁকে।