বৃক্ষরাজির শেষ বিকেলের গন্ধমাদকতা
সন্ধ্যায় শিউলির সুবাস, রাতের শিশির।
কুয়াশার চাদরে মোড়ানো ভোরের নিসর্গ
তোমার আগমনী বারতা।
শানদেয়া কাস্তে ঝলমল কিষাণের ঠোঁটে মৃদু হাসি।
সোনালী ধানের ক্ষেতে মৃদু বায় ঢেউ খেলে যায় চঞ্চলা আঁখি।
পৌষালীর পিঠাপুলি উৎসব আয়োজন সংক্রান্তি ঘিরে শশব্যস্ত ক্লান্ত কিষাণী।
মাঠপোড়া মটরশুটির স্বাদেদ
দু’হাতে বিলায় উচ্ছ্বসিত কিশোর কিশোরী।
বৃত্তাকারে আনম্য অশীতিপর বৃদ্ধা
খড়কুটার ঘুষঘুষে অনল-উত্তাপে স্বস্তি।
দুষ্টুমতি শিশুকিশোরের নব দুরন্তপনা
সকাল-সন্ধ্যা যেন শুধু খুশির জোয়ার।
পৌষমেলার পড়ন্ত বিকেলে শ্রান্ত নাগরদোলা
অদম্য তবু নব যুগলের সব আকুলতা।
নারকেল পাতার রকমারি বাঁশি,
মেলা শেষের এলোমেলো সুর, সাঙ্গ কোলাহল।
মাঘের কণ্টকিত হিম, হ্যাজাকের তীব্র আলোয়
আত্মহুতি দেয় অজানা নানান কীট।
জারি-সারি-বাউল গানের কৌতুহলী কথকতা
কবিগান আর যাত্রা পালা চলে রাতভর।
শৈত্যপ্রবাহে ঠকঠক কাঁপা
সংক্রন্দন দেহ নিথর।
ঋতুবদলের মমতাহীন খেলা
যেন হৃদয়ে রক্তক্ষরণ।
প্রকৃতির বিবর্ণতা মর্মর ধ্বনি ঝরা পাতা
জানিয়ে দেয় তোমার প্রস্থান পালা।
অপেক্ষা আগমনের নব তরুপল্লবের
নব রূপে, নব সাজে, নব বসন্তের।