জাতীয়
টেন্ডারের আগেই সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে মাছবাজার দখলের অভিযোগ বিএনপির দুই নেতার বিরুদ্ধে

টেন্ডারের আগেই সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে মাছবাজার দখলের অভিযোগ উঠেছে দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। মাছ বাজারের দুই পাশে ঝুলিয়ে দিয়েছেন তাদের ছবি সংবলিত ব্যানারও।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম নগরের চাক্তাই ফিশারিঘাট এলাকায় দেখা গেছে এমন চিত্র। অভিযোগ উঠেছে, চসিকের পক্ষ থেকে এখনও বাজারটি ইজারা না হলেও ইজারাদার দাবি করে টাকা তুলছেন ওই দুই নেতা। পাশাপাশি ওই এলাকায় পান দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে গণহারে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কে আছেন এলাকাটির সাধারণ ব্যবসায়ীরা।
বিএনপির আলোচিত এই দুই নেতা হচ্ছেন- চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন চৌধুরী আছু ও মহানগর বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ নবাব খান।
যদিও শুধু সাইনবোর্ড লাগিয়ে কাজ শেষ করেননি। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে চসিকের একটি স্মারক নম্বরও। তারা যে সাইনবোর্ড ঝুলিয়েছেন সেখানে দুজনের ছবি ছাড়াও সবার ওপরে দেওয়া হয়েছে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের ছবিও। আর সবুজ কালিতে তাদের পরিচয়ে লেখা হয়েছে ‘ইজারাদার’। মাছবাজারে সাইনবোর্ড টানানো দুই বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাতের অনুসারী বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
অথচ চসিক বলছে, ওই বাজারটি এখনও ইজারা দেওয়া হয়নি। গত ১৬ এপ্রিল দুইটি দৈনিকে চসিক তাদের আওতাধীন পাঁচটি ফেরি ও ফিশারি ঘাট বাংলা ১৪৩২ সনের অবশিষ্ট সময়ের জন্য ইজারা দিতে দরপত্র আহ্বান করে। ফেরি ঘাটগুলো হচ্ছে-সল্টগোলা ঘাট, ফিশারি ঘাট, চাক্তাই খালের পাশে পান ঘাট থেকে গইজ্জের ঘাট, পতেঙ্গা চাইনিজ ঘাট ও চাক্তাই লবণ ঘাট। এসব ফেরি ঘাটের ফরম সংগ্রহ করার জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হয় ২৯ এপ্রিল (মঙ্গলবার)। দরপত্র দাখিলের তারিখ নির্ধারণ করা হয় ৩০ এপ্রিল।
তবে চসিকের টেন্ডারের না হওয়া এবং ছবিসহ ব্যানার ঝুলানোর বিষয়ে জানতে চাই অভিযুক্তরা দাবি করেছেন, মেয়রের মৌখিক নির্দেশেই তারা সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে টাকা আদায় শুরু করেছেন।
সাবেক মহানগর বিএনপির উপদেষ্টা ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ নবাব খান বলেন, ছাত্র-আন্দোলনে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এর ১৫-২০ দিন পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আমাকে আর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন চৌধুরী আছুকে টাকা আদায়ের দায়িত্ব দেন। আমরা ঠিকাদার নই। সাইনবোর্ডে ঠিকাদার উল্লেখ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঠিকাদার উল্লেখ করা আমাদের ভুল হয়েছে।’
চসিকের ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতাধীন পাঁচটি ফেরিঘাটে বাংলা ১৪৩২ সনের অবশিষ্ট সময়ের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। এসব ফেরিঘাটের ফরম সংগ্রহ করার জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হয় ২৯ এপ্রিল। দরপত্র দাখিলের তারিখ নির্ধারণ করা হয় ৩০ এপ্রিল। টেন্ডার প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি। ঠিকাদার সেজে কেউ সাইনবোর্ড তোলার বিষয়টি আমার জানা নেই।
চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল বলেন, তাদের দুজনকে খাস আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্ত তারা ইজারাদার নয়।