খেলা
হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা বহালেও ফিরছেন না আম্পায়ার সৈকত

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব নিয়েই মোহামেডানের ক্রিকেটার তাওহিদ হৃদয়ের ওপর দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞার শাস্তি বহাল করেছেন বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিম। মোহামেডানের পরবর্তী ম্যাচ ২৬ এপ্রিল। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে সেই ম্যাচে নিষিদ্ধ থাকবেন তিনি।
শাস্তি কমিয়ে হৃদয় যে ম্যাচটি খেলেছেন, সেটির বৈধতা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিসিবি কার্যালয়ে নাজমুল আবেদীন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘শাস্তি মওকুফের সিদ্ধান্তটি বাতিল করে আগের মতো দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞাই বহাল থাকছে। আমরা মনে করি, তাওহিদ হৃদয়ের শাস্তি মওকুফের সিদ্ধান্ত আমরা প্রক্রিয়ার বাইরে চলে গিয়েছিলাম।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এক ম্যাচ শেষে হৃদয়কে ফের মাঠে নামার অনুমতি দেওয়া হয়, যা আমরা এখন আর ফিরিয়ে আনতে পারব না। সেটিকে আমরা বৈধ হিসেবেই বিবেচনা করছি। তবে সম্প্রতি পরিবর্তিত বাইলজটি অকার্যকর ঘোষণা করা হবে এবং পূর্বের নিয়ম বলবৎ থাকবে। সেই ধারাবাহিকতায় হৃদয় পরবর্তী ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন না।’
হৃদয়কে পরের ম্যাচে নিষিদ্ধ করলেও বিসিবির চাকরিতে আপাতত ফিরে আসছেন না আইসিসির এলিট আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। এর আগে আম্পায়ার্স বিভাগের চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু জানিয়েছিলেন, সৈকত পদত্যাগ করছেন না। তবে ঢাকা লিগে ক্লাব কর্মকর্তার অবৈধ প্রভাবের প্রতিবাদস্বরূপ সৈকত পদত্যাগের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা থেকে তিনি সরে আসবেন না।
সৈকত-ঘনিষ্ঠ এক সূত্র সমকালকে নিশ্চিত করছে তা। ‘যে কারণে সৈকত পদত্যাগ করেছে, সেটা পুরো বিশ্বক্রিকেট জেনে গেছে। এখন তা থেকে সরে আসার পথ নেই। এটা ঠিক যে বিসিবি থেকে তাকে ফিরে আসার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সৈকত কাউকে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত জানায়নি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সূত্রটি আরও জানায়, অভিমান নয়, এটা এক রকম বাস্তবতা মেনে সরে আসা। বিসিবি যাতে ভবিষ্যতে এসব অনিয়ম থেকে দূরে থাকে, সেই লক্ষ্যেই সৈকত এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যে চুক্তি থেকে তিনি বেরিয়ে এসেছেন, তাতে আর ফিরবেন না। হয়তো নতুন কোনো চুক্তিতে ভবিষ্যতে ফিরতে পারেন।
দিন তিনেক আগে পদত্যাগের চিঠি পাঠানোর পর আর স্টেডিয়ামমুখী হননি সৈকত। আইসিসি ও বিসিবির এলিট আম্পায়ার সৈকতের মাসিক বেতন ছিল দুই লাখ টাকা। ম্যাচ ফিতেও শীর্ষে ছিলেন তিনি। দেশের ক্রিকেট বোর্ড সর্বোচ্চ সম্মান দিলেও আম্পায়ার্স বিভাগের একটি অনৈতিক সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি তিনি। ১১ এপ্রিল আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে তাওহিদ হৃদয়ের শৃঙ্খলা পরিপন্থি আচরণে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের টেকনিক্যাল কমিটি দুই ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা দেয় হৃদয়কে। টেকনিক্যাল কমিটিকে উপেক্ষা করে মোহামেডানের চাপের কথা বলে আম্পায়ার্স বিভাগের চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু এক ম্যাচ শাস্তি স্থগিত করেন। যেটা মারাত্মকভাবে সম্মানহানি করেছে বলে মনে করেন এলিট আম্পায়ার সৈকত ও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের টেকনিক্যালি কমিটির চেয়ারম্যান এনামুল হক মনি। প্রতিবাদে সৈকত বিসিবির চুক্তি থেকে পদত্যাগ করেন। আর মনিও টেকনিক্যাল কমিটি ছেড়ে দেন।