সারাবাংলা

সাতক্ষীরায় বিএনপির দু’ গ্রুপে সংঘর্ষ, ১৪৪ ধারা জারি

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় বিএনপির ইউনিয়ন কমিটির সম্মেলন নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার বধিহাটা ইউনিয়নের বেউলা সাইক্লোন শেল্টার মাঠে সংঘর্ষ হয়। সম্মেলনস্থলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনা সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকায় বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইয়াছির আরাফাত পলাশ, যুবদলের বকুল, শরিফুল, আশিক, কল্লোল, দীপু, রমজান আলী, মনিরুল, আজমিনুর, হাশেম আলী, মিঠু আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইয়াছির আরাফাত পলাশকে গুরুতর অবস্থায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আশাশুনি উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে টানা কয়েক দিন ধরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কৃষ্ণা রায় জানান, বুধহাটা ইউনিয়ন বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বেউলা সাইক্লোন শেল্টার মাঠে বিএনপির দুই গ্রুপের উত্তেজনা বিরাজ করায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সেখানে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ১৪৪ জারি করার পরও সেখানে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপির দুই গ্রুপের হামলা ও পাল্টা হামলার খবর শুনে সেখানে তিনিসহ সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাশেদ হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনা সদস্যরা পৌঁছে সকলকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। সেখানে মাইকিং করে সভা-সমাবেশ বন্ধসহ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়।
তিনি আরো জানান, পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে নিয়োজিত রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
উপজেলা বিএনপির (জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ তারিকুল হাসান গ্রুপ) আহ্বায়ক আসিফুর রহমান তুহিন ও সদস্য সচিব জাকির হোসেন বাচ্চু বলেন, ‘‘প্রশাসনের দেওয়া ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে তারা ত্যাগী নেতাদের বাদ রেখে গোপনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠন করার চেষ্টা করলে আমরা সেটা বন্ধ রাখার জন্য তাদের অনুরাধ জানাই। তারা সেটি না করে গায়ের জোরে সম্মেলন করার চেষ্টা করে এবং আমাদের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এরপর আমাদের ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরাও পাল্টা হামলা চালায়। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হন।’’
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান হবিকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ ও আগামীতে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা উপেক্ষা করে সম্মেলন আহ্বান করা হলে তা প্রতিহত করার ঘোষণা দেন।
সম্মেলনের পক্ষে উপজেলা বিএনপির অপর গ্রুপের (জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ ইফতেখার গ্রুপ) সদস্য সচিব মশিউল হুদা তুহিন ও যুবদল সদস্য সচিব আবু জাহিদ সোহাগ বলেন, ‘‘বুধহাটা ইউনিয়ন কমিটির সম্মেলনের জন্য পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সকাল ১০টা থেকে আমরা ভোট গ্রহণ করছিলাম। প্রতিপক্ষ পরিকল্পিতভাবে রড, লাঠি, ইটপাটকেল নিয়ে হামলা করে সম্মেলন পণ্ড করার করে। এ সময় আমাদের নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুললে তারা ফিরে যেতে বাধ্য হয়। এরপর আমরা পুনরায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোট শুরু করলেও পরে প্রশাসন সেখানে এসে সম্মেলন পণ্ড করে দেন।’’
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নোমান হোসেন জানান, ১৪৪ জারি করার পর এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

আরও দেখুন

এ বিষয়ের আরও সংবাদ

Close