Uncategorized

অনশন স্থগিত করে সচিবালয় ছাড়লেন শিক্ষার্থীরা, শাটডাউন চলবে

দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর করার আশ্বাস পেয়ে অনশন স্থগিত করে সচিবালয় ছেড়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দাবি মেনে নেওয়ার ‘আশ্বাস’ দিলে সচিবালয় ছাড়ার সময় তারা অনশন স্থগিত করে এ ঘোষণা দেন।
সচিবালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একেএম রাকিব বলেন, “শিক্ষা মন্ত্রণালয় আমাদের লিখিত দিয়েছে। তারা বলেছেন বুধবার মিটিংয়ে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর করা হবে। মন্ত্রণালয় শিক্ষার্থীদের জন্য বাণী ভবন ও আরও একটি ভবন নির্মাণ করতে বরাদ্দ দেবে।”
তিনি বলেন, “অনশন কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। তবে লিখিতভাবে আমাদের দাবি পূরণ না করা পর্যন্ত কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনসহ সবগুলো ভবন বন্ধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ক্লাস-পরীক্ষা হবে না। বুধবার আমাদের দাবি পুরোপুরি ভাবে মেনে নেওয়া হয়েছে জানার পর আমরা ক্লাসে ফিরে যাব।”
এর আগে, রবিবার (১২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে তিন দফা দাবিতে গণঅনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। অনশনে অসুস্থ হয়ে রাত পর্যন্ত ১৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে অনশনে বসেন উপাচার্য।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজামুল হক, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন, অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন অনশনে বসেন। পরে উপাচার্য অনশন ভাঙার কথা বললে শিক্ষার্থীরা তা মানতে রাজি হননি।
যে তিন দফা দাবি শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন তা হলো, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর করা; শিক্ষার্থীদের অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা; অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত অন্তত ৭০ ভাগ শিক্ষার্থীকে আবাসন ভাতা প্রদান।
অনশনরত শিক্ষার্থীরা সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে ঘোষণা দেন, মন্ত্রণালয় ও সেনা কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে না বসলে সচিবালয় ঘেরাও করবেন।
বিকেল ৩টার দিকে আগামী বুধবার (১৫ জানুয়ার) দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণ কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, “ইউজিসি থেকে চিঠি মন্ত্রণালয়ে গেছে। বুধবার সভা নির্ধারিত হয়েছে। সভায় সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা হবে এবং যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হস্তান্তর হবে। সেনাবাহিনীকে কাজ দেওয়ার ব্যাপারে আমরা ইউজিসির সঙ্গে আগেই কমিটমেন্টে ছিলাম।”
উপাচার্য বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলেই আমাদের এ কার্যক্রম আরো সহজ ও ত্বরান্বিত হয়েছে। আমাদের কাজ অনেকটা এগিয়ে গেছে। মিটিংয়ে প্রকল্পের অবস্থাও বিশ্লেষণ করা হবে। তারপর একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সভায় আমরা বিবিধের সেক্টরে আমাদের দাবির অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব।”
এ সিদ্ধান্ত জানার পরও অনশন কর্মসূচি বন্ধ করেননি শিক্ষার্থীরা। তারা বিকেল ৪টার দিকে সচিবালয়ের দিকে রওনা দেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা সচিবালয়ের ফুটপাতে অনশন চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দেন। পরে বিকেল ৫টার দিকে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান তারা।
তাদের দাবিগুলো হলো– সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে, প্রয়োজনে বিশেষ মিটিংয়ের মাধ্যমে তা সম্পূর্ণ করতে হবে ও ভিজ্যুয়ালভাবে সবার সামনে উপস্থাপন করতে হবে, শিক্ষার্থীরা অনশনে থাকা অবস্থায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দফতর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নিয়ে তা প্রকাশ করতে হবে, দীর্ঘসূত্রিতা করা চলবে না।
অপর দুইটি দাবি হলো- পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে; যতদিন পর্যন্ত আবাসন ব্যবস্থা না হয় ততদিন ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।

আরও দেখুন

এ বিষয়ের আরও সংবাদ

আরো দেখুন

Close
Close