খেলা

‘বাংলাদেশে বাস্কেটবল নার্সারি পর্যায়ে’

সত্তর-আশির দশকে বাংলাদেশে জনপ্রিয় খেলার মধ্যে অন্যতম ছিল বাস্কেটবল। সময়ের বিবর্তনে এই খেলা এখন অস্তিত্বে সংকটে। নেই খেলার কোর্ট, ফেডারেশনের অফিস। এমন সংকটের মধ্যেও ফেডারেশনের নতুন কমিটি বাস্কেটবলকে নতুনত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
ফুটবলের মতো বাস্কেটবলেও হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে খেলা পরিচালনার পরিকল্পনা করেছে ফেডারেশন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে খেলা করতে চাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাহাঙ্গীরনগরে গিয়ে খেলবে আবার জাহাঙ্গীরনগর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে খেলবে। বাংলাদেশে বাস্কেটবলে বোধ হয় এর আগে এ রকম হয়নি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এই পদ্ধতি শুরু করতে চাই’-বলেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মেজর আতিকুল হাফিজ (অব.)।
১৪ নভেম্বর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ নয় ফেডারেশনে অ্যাডহক কমিটি গঠন করেছে। বাস্কেটবল ডিসেম্বর মাসে বিজয় দিবস টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছে। আজ বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনে ২০২৫ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ষপঞ্জি ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে দ্বিতীয়,প্রথম বিভাগ লিগ, জাতীয় চ্যাম্পিয়নশীপ, জুনিয়র প্রতিযোগিতা ও বিভিন্ন কোর্স রয়েছে।
সিনিয়র জাতীয় দলের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের অংশগ্রহণের বিষয়টি এই বর্ষপঞ্জিতে নেই। এই বিষয়ে প্রশ্ন হলে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন,‘আন্তর্জাতিক সূচি করে ফিবা ও সাবা ২০২৫ সালের সূচিতে বাংলাদেশের খেলা নেই। এশিয়ান পর্যায়ে যে খেলাগুলো আছে , সেগুলো বাংলাদেশের স্তরের নয়। আমরা জুনিয়র টুর্নামেন্টে শ্রীলংকায় অংশগ্রহণ করব।’
ক্রীড়াঙ্গনে অ্যাডহক কমিটি মূলত ৯০ দিনের। তবে এবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ফেডারেশনের কমিটির সময়সীমা বেধে দেয়নি। ২০২৫ সাল ব্যাপী বর্ষপঞ্জি ঘোষণা করলেও এই সময় পর্যন্ত কমিটি থাকবে কি না এই নিয়ে প্রশ্ন উঠলে সাধারণ সম্পাদকের উত্তর,‘এনএসসি আমাদের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়নি। আমরা একটি কর্মপরিকল্পনা করেছি। সেটা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। এনএসসি এরপর কমিটি বদল বা নির্বাচনের নির্দেশনা দিলে সেটা অনুসরণ করব।’
অনেক ফেডারেশন বর্ষপঞ্জি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করে। বছরের একটা পরিকল্পনা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে সরবারহ করে। সেটার অধিকাংশই আবার বাস্তবায়ন করতে পারে না। এর পেছনে বড় কারণ অর্থ। ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক আর্থিক দিকটা সামনে আনেননি,‘আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছি তখন আর্থিক স্বচ্ছলতা ছিল, এখনও আছে, সামনেও থাকবে। পাশাপাশি আমরা পৃষ্ঠপোষকতা যোগাড় করে এই সূচি বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।’ বাস্কেটবল ফেডারেশনের বিদায়ী কমিটি ফান্ডে প্রায় ২ কোটি টাকা রেখেছে। বাস্কেটবলের প্রেক্ষাপটে বেশ বড় অঙ্কের টাকা। ফলে অ্যাডহক কমিটিকে আর্থিক বিষয় নিয়ে তেমন বেগ পেতে হচ্ছে না।
ফুটবল, ক্রিকেটের বাইরে দেশের অন্য সকল ফেডারশেন আর্থিক ও অবকাঠামো সমস্যায় ভুগে। বাস্কেটবলের কষ্ট সবচেয়ে বেশি। নেই খেলার কোর্ট ও ফেডারেশনের অফিস। এই সম্পর্কে আজ একটা আশার আলো শুনিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক,‘আজই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ক্রীড়া শাখা থেকে একটি চিঠি পেলাম। রোলার স্কেটিংয়ে বাস্কেটবল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এখন সেখানে সেনাবাহিনী ক্যাম্প করছে। সেই ক্যাম্প শেষ হলে আমরা ওখানে বাস্কেটবল নিয়ে কাজ শুরু করব।’
বাস্কেটবল ফেডারেশনের সভাপতি ড.শামীম নেওয়াজ যিনি ক্রীড়াঙ্গনে আকা হিসেবেই পরিচিত। তিনি আজ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের বাস্কেটবল নিয়ে নির্মম বাস্তবতার কথা বলেছেন,‘আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাস্কেটবল যে উডের পর খেলা হয় বাংলাদেশে সেটা নেই। ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স বাধাগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশের বাস্কেটবল নার্সারি পর্যায়ে। ক্রীড়া সামগ্রী, অবকাঠামো এগুলো আন্তর্জাতিক মানের না হলে খেলোয়াড়রাও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো করতে পারবে না।’

ট্যাগসমূহ
আরও দেখুন

এ বিষয়ের আরও সংবাদ

Close