সারাবাংলা

অনিয়ন্ত্রিত পাইলিংয়ে দেবেছে সড়ক, ধসেছে দুই দোকান

লক্ষ্মীপুরে নিয়মবহির্ভূতভাবে একটি বহুতল ভবন পাইলিংয়ের কারণে পুকুরের তলদেশের মাটি ধসে দেবে গেছে সড়ক। এতে পাশের দুটি দোকান ও একটি কবরস্থান ভেঙে গেছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। এতে সহস্রাধিক পরিবার বিপাকে পড়েছে।
বুধবার রাত ২টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার শাখারীপাড়া সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার প্রকৌশলী জুলফিকার জুয়েল। তিনি বলেন, ওয়ে হাউজিং কোম্পানিকে ওই এলাকায় একটি সাততলা ভবন নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তারা ১০ তলা ভবন নির্মাণে উদ্যোগ নেয়। এ বিষয়ে অনুমতি নেওয়ার তথ্য তাঁর জানা নেই। প্রতিষ্ঠানটি নিয়ম মেনেই পাইলিং করছিল জানিয়ে জুলফিকার জুয়েল বলেন, নির্মাণাধীন ভবনের পাশেই পুকুর রয়েছে। যে কারণে মাটির নিচ দিয়ে পানির স্তর পেয়ে যায়। এ কারণেই ওই সড়কটি দেবে গেছে বলে মনে করেন তিনি।
তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, আবাসন কোম্পানির অনিয়ন্ত্রিত পাইলিংয়ের কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারা ভবন নির্মাণের জন্য এক্সক্যাভেটর দিয়ে সম্প্রতি প্রায় ৩০ ফুট মাটি খুঁড়েছে। এতে পুকুরের পানি আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পানির চাপে রাস্তা দেবে ভেঙে গেছে। এ সময় পুকুরের পাশের দুটি দোকানও ভেঙে গেছে। ভেঙে গেছে যুক্তবাংলা আইন পরিষদের সদস্য মরহুম আব্দুল হাকিম উকিলের কবরস্থানও। সড়ক ও আশপাশে ফাটল ধরায় এলাকার ভবনগুলো ঝুঁকিতে পড়েছে।
ভেঙে যাওয়া দোকান দুটির মালিক শাহিন কাদির রিপনের অভিযোগ, ‘অনিয়ন্ত্রিত পাইলিংয়ের কারণেই মাটি সরে গেছে। এতে আমার দুটি দোকান ভেঙে অন্তত ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
একই অভিযোগ করেন স্থানীয় একটি ভবনের মালিক শামছুল আলম। তাঁর ভবনটিও এখন ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানান তিনি। ওয়ে হাউজিংয়ের এজিএম হাসান আহমেদের ভাষ্য, ‘আমরা ভবনটি ১০ তলা করব। পৌরসভা থেকে সাততলার অনুমোদন রয়েছে। আপাতত ওই সাততলাই নির্মিত হবে।’ তারা নিয়ম অনুযায়ী কাজ করছেন দাবি করে বলেন, ‘অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ওই ঘটনাটি ঘটে গেছে। সড়ক ও দোকান মালিকদের ক্ষতিপূরণ আমরা দিয়ে দেব। সড়কের যেন বেশি ক্ষতি না হয়, সে জন্য আমরা ইতোমধ্যে মাটি ফেলার ব্যবস্থা নিয়েছি।’
দুর্ঘটনার পর গ্যাস লাইনে আগুন ধরে যায় জানিয়ে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের লক্ষ্মীপুর কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) এস এম জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ কারণে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আগামী রোববার কুমিল্লা থেকে লোকজন এসে মেরামত করবেন। পরে গ্যাস সংযোগ চালুর আশ্বাস দেন।
পৌরসভার প্রকৌশলী জুলফিকার জুয়েলের ভাষ্য, বুধবার রাতের দুর্ঘটনায় সড়ক ও ড্রেনের প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিপূরণ পাওয়ার পর সড়ক সংস্কার শেষে ভবন নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হবে। আপাতত সড়কটি বন্ধ রাখা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক রাজিব কুমার সরকারও দুর্ঘটনার তথ্য পেয়েছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

ট্যাগসমূহ
আরও দেখুন

এ বিষয়ের আরও সংবাদ

Close