ভ্রমণ

সিলেট-ম্যানচেস্টার রুটে ফের ফ্লাইট বন্ধের শঙ্কা

আট বছর বন্ধ থাকার পর প্রবাসীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ৭ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার থেকে সিলেটের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট চলাচল শুরু করেছিল বাংলাদেশ বিমান। ফ্লাইট শুরুর পর থেকে গত চার বছর ধরে প্রতি সপ্তাহে তিন দিন সিলেট-ম্যানচেস্টার বিমানের ফ্লাইট অব্যাহত ছিল। চার বছরের মাথায় আবারও বন্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তিনটি ফ্লাইটের মধ্যে গত অক্টোবর থেকে বন্ধ হয়ে গেছে একটি। বাকি দুটি ফ্লাইটও বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসীসহ সিলেটী যাত্রীরা।
এদিকে, আগামী এপ্রিলের পর থেকে ওই রুটে অনলাইনে টিকিট বুকিং ইতোমধ্যে বন্ধ রাখা হয়েছে। আশঙ্কা বাড়ছে সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ হওয়ার। বিমান কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি। কী কারণে ফ্লাইট কমানো হয়েছে এবং এপ্রিল থেকে কেন বুকিং নেওয়া হচ্ছে না সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট করা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার পেছনে আশানুরূপ লাভ করতে পারছে না বিমান। ধীরে ধীরে ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকায় সিলেটের ট্রাভেলস ব্যবসায়ী, আটাব নেতৃবৃন্দ, ইউকে এনআরবি সোসাইটিসহ ম্যানচেস্টার এলাকায় বসবাসকারীরা সোচ্চার হয়ে ওঠেছেন। তারা তিন দিনসহ ফ্লাইট চালু অব্যাহত রাখার দাবি জানাচ্ছেন।
প্রবাসীদের তথ্য মতে, যুক্তরাজ্যের নর্থ ইংল্যান্ডে আড়াই থেকে তিন লাখ প্রবাসী বাঙালি বসবাস করছেন; যাদের অধিকাংশের বাড়ি সিলেট অঞ্চলে। ম্যানচেস্টার-সিলেট সরাসরি ফ্লাইট চালু করায় বার্মিংহাম, নিউক্যাসল, সান্ডারল্যান্ড, গ্রেটার ম্যানচেস্টার ও পুরো স্কটল্যান্ডের প্রবাসীরা যাতায়াত সুবিধার আওতায় আসেন। এর আগে সিলেটের সঙ্গে ম্যানচেস্টারের সরাসরি বিমান ফ্লাইট চালু ছিল। ২০১২ সালের পর তা বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হওয়ার ৮ বছর পর ২০২০ সালের শুরুতে আবার ফ্লাইট শুরু করে বাংলাদেশ বিমান। চার বছরের মাথায় আবার বন্ধের আশঙ্কা প্রবল হয়ে ওঠেছে।
প্রবাসীরা প্রশ্ন তুলেছেন, লাভজনক হওয়ার পরও কেন তিনটি ফ্লাইটের মধ্যে একটি বন্ধ করা হয়েছে। এপ্রিলের পর অনলাইনে তারা টিকিট বুকিং করতে পারছেন না। এতে প্রবাসীরা ধারণা করছেন, এপ্রিলের পর থেকে সপ্তাহের অপর দুটি ফ্লাইটও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। প্রবাসীরা ইতোমধ্যে ম্যানচেস্টারের সহকারী হাইকমিশনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। সিলেটের বিমানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা দাবি জানাচ্ছেন ফ্লাইট চালু রাখার।
ইউকে এনআরবি সোসাইটির সদস্য সারওয়ার হোসেন সুজন সমকালকে জানিয়েছেন, তারা স্মারকলিপি ছাড়াও মানববন্ধন করেছেন। সরকারের কিছু ক্ষতি হলেও প্রবাসীদের স্বার্থে ফ্লাইট চালু রাখার দাবি করেন তিনি।
যাত্রীদের দাবি নিয়ে সবসময় সোচ্চার থাকা অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) সিলেট জোনের সাবেক সভাপতি আব্দুল জব্বার জলিল বলেন, ‘আমরা অতীতে সংগ্রাম করে বিমানের কাছ থেকে বিভিন্ন দাবি আদায় করেছি। মাঝেমধ্যে কারণ ছাড়াই আমাদের হতাশার মধ্যে ফেলে দেয় তারা।’
এদিকে, ম্যানচেস্টারে বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার মোহাম্মদ জোবায়েদ হোসেন সম্প্রতি এক ভিডিওবার্তা দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, প্রবাসীদের কথা চিন্তা করে বিষয়টি নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন।
সিলেট-ম্যানচেস্টার ফ্লাইট বন্ধ হচ্ছে কিনা এমন বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ কর্মকর্তা বুশরা ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সিলেটের অনেকে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন।

ট্যাগসমূহ
আরও দেখুন

এ বিষয়ের আরও সংবাদ

Close