ফিচার
বালিয়াটি প্রাসাদ
নুরুল্লাহ মাসুম
মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়ায় অবস্থিত বালিয়াটি প্রাসাদ বাংলাদেশের প্রাচীন প্রসাদগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। দীর্ঘদিন ঢাকায় থাকার পরেও দেখা হয়নি সেটি। ১০ সেপ্টেম্বর অপরাহ্ণে সেটি দেখার একটু সুযোগ এলো, যখন ভাতুষ্পুত্র, জাহাঙ্গরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সৈয়দ আবু তোয়াব শাকির জানালো, হাতে সময় রয়েছে- চলুন ঘুরে আসি সাটুরিয়া থেকে। সে জানে, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতি আমার একটা দারুন টান রয়েছে। সুযোগটার সদব্যবহার করতে একটুও দেরি করিনি।
বিকেলে রওয়ানা হলাম তার গাড়িতে করেই। জাহাঙ্গীরনগর থেকে ৩৭ কিলোমিটার দূরে বালিয়াটি জমিদার বাড়ি। সন্ধ্যার খানিকটা আগে পৌঁছলাম প্রাসাদের সামনে। বাইরে থেকে দৃশ্যমান চারটি সুদৃশ্য অট্টআলিকা যে কোন ভ্রমণপিয়াসির মন কাড়বে। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তত্ত্ববধানে থাকায় সেখানে প্রবেশ করতে টিকেট কাটতে হলো, জনপ্রতি ২০টাকা। প্রবেশ করে মনে হলো আরো খানিকটা আগে আসতে পারলে ভাল হতো। বিশাল প্রসাদ এলাকা ঘুরে দেখার জন্য পর্যাপ্ত সময় নিয়ে যাওয়াই উচিত।
সামনের সারিতে বিশাল আকারের চারটি প্রাসাদ। দুইধারের দুটি ভবনের গঠণ প্রণালী একই রকম। মাঝখানের দুটির গঠণ একই ধরণের। জানা গেল চারটি ভবন একসাথে নির্মিত হয়নি। জমিদারদের বংশের বিভিন্ন উত্তরাধিকারীগণ বিভিন্ন সময়ে এগুলো নির্মান করেছেন।
ভবনগুলোর সামনের স্তম্ভগুলো কোরিন্থিয়া স্টাইলে নির্মিত; মানে হলো গ্রীক সভ্যতায় নির্মিত ভবনের মতো করে সামনের স্তম্ভ বা পিলারগুলো নির্মিত। দুই পাশের দুইটি ভবনের স্তম্ভগুলোর নিচের অংশের নির্মানশৈলী কিছুটা ভিন্ন প্রকৃতির- রয়েছে চারকোনা স্তম্ভ, বাকী অংশ গেলোকার। প্রথম দর্শণেই মনে হবে কোন গ্রিক ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। চারটি ভবনই সমান উচ্চতায় নির্মিত, তবে দুটি তিনতলা বিশিষ্ট ভবন, দুটি দোতলা ভবন। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের দেয়া তথ্যানুসারে জানা গেল মাঝের দুটি ভবন মূলত জমিদারদের দাপ্তরিক কাজে ব্যবহৃত হতো। মধ্যের ভবন দুটোর একটিতে বর্তমানে ছোট্ট জাদুঘর করা হয়েছে, যদিও সেথায় সংরক্ষণের মতো তেমন কিছু নেই- জমিদারতের অর্থ সংরক্ষণের জন্য বড় বড় কতগুলো সিন্দুক রয়েছ, যা দেখে মনে করা যেতে পারে জমিদারদের সংগ্রহ ছিল ব্যাপক!
সঠিক কোন তথ্য কোথাও মিললো না, সব্যত্রই জানা গেল- ভবনগুলো ১৯ শতকে নির্মিত হয়েছিল- সঠিক সন-তারিখ নেই। নির্দিষ্ট কোন সময় উল্লেখ না করে সর্বত্র বলা হচ্ছে ১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে জনৈক “গোবিন্দ রাম সাহা” এই জমিদার পরিবারের গোড়াপত্তন করেন। এখানে রয়েছে মোট সাতটি স্থাপনা, এবং এগুলো একবারে নির্মিত হয়নি। জমিদার পরিবারের বিভিন্ন উত্তরাধিকারগণ বিভিন্ন সময়ে এগুল নির্মান করেছেন।
স্থানীয়ভাবে আলাপ করে জানা গেল সাহা পরিবার সাটুরিয়া জমিদারির ১০ আনা অংশের মালিক ছিলেন “সাহা” পরিবার। বাকী ৬ আনা অংশের মালিক ছিলেন “রায় চৌধুরী” পরিবার। শতকরা হিসেব করলে মোটামুটি ৬০ শতাংশ এবং ৪০ শতাংশ হয় অংশীদারিত্বের এই হিসাব। সাহা পরিবার ও চৌধুরী পরিবারের মধ্যে জমিদারীর এই অংশীদারিত্ব কেন হয়েছিল তার কোনো তথ্য মেলে না। ধারণা করতে পারি, এই দুই পরিবার কোনো না কোনোভাবে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ ছিলো।
যে ভবনগুলোর সামনে আমরা দাঁড়িয়ে এবং সবাই যে প্রসাদ দেখতে যান, তা সাহা পরিবারের। চৌধুরী পরিবারের বসবাস ছিলো সাহা পরিবারে প্রাসাদ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পশ্চিমে। যেখানে এখন রয়েছে ভাঙ্গা দুটো ভবন এবং খানিকটা আরো পশ্চিমে একটি ভবন। রয়েছ দুটো সিংহদ্বার। দেখ মনে হয় দুটো সিংহদ্বারের একটি ছিল কাচারি বাড়ির জন্য এবং অন্যটি ছিলো অন্দরমহলের জন্য। প্রচারণা না থাকায় চৌধুরী পরিবারের এই স্থাপনা দেখতে সাধারণত পর্যটকগণ আসেন না।
এই চৌধুরী পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন কিশোরীলাল রায় চৌধুরী এবং রায় বাহাদুর হরেন্দ্র কুমার রায় চৌধুরী। এর দুজনেই তখন শিক্ষাখাতে উন্নয়নের জন্য প্রচুর কাজ করে বিখ্যাত হয়েছিলেন। ঢকার জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কিশোরি লাল রায় চৌধুরীর পিতা জগন্নাথ রায় চৌধুরী। তার নামেই প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়।
স্থানীয়ভাবে আলাপ করে জানা যায়, রায় চৌধুরীর অধস্থন বংশধরগণ পাকিস্তান শাসনামলের শেষ পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করতেন এবং ক্রমান্বয়ে সম্পত্তি বিক্রি করে দেশান্তরী হন। ভবনগুলো যারা কিনে নিয়ে সেখানে বসবাস করছেন, তাদের মধ্যে একজন- মোহাম্মদ আলী জানালেন, তারা সম্পত্তি কিনেছেন ৭২/৭৩ সালের দিকে। সেমতে ধরে নেয়া যায় স্বাধীনতা উত্তরকালেও রায় চৌধুরীদের বংশধররা সেখানে বসবাস করতেন। অপরদিকে দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টে জানা যায়, চৌধুরী পরিবারের অধস্থন সদস্য সুরেন্দ্র কুমার রায় চৌধুরীর পুত্র নৃপেন্দ্র কুমার রায় চৌধুরী দেশ বিভাগের সময় ভারত চলে গেলে তাদের জমি-জমা অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে সরকারী খাস জমিতে পরিণত হয়। ঢাকা জেলা প্রশাসন চৌধুরী পরিবারের জমি দেখভাল করছিলেন। বালিয়াটির এই জমিদার পরিবারের বালিয়াটি ছাড়াও বর্তমান সাভার থানাধীন পাথালিয়া ইউনিয়নে ভু-সম্ত্তি ছিল অনেক। স্থানীয় কতিপয় লোক পাথালিয়ায় তাদের সম্পত্তি ভুয়া দলিল তৈরি করে দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন জনৈক মোহাম্মদ আলী; জানি না যে মোহাম্মদ আলীর সাথে আলাপ করেছি তিনি সেই ভ্যক্তি কি না!
অন্যদিকে সাহা পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা জমিদারদের সম্পর্কে একটু বিস্তারিত জানা যায়। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের নামফলকে তাদের কথাই বলা হয়েছে। সেমতে প্রতিষ্ঠাতা গোবিন্দ রাম সাহা’র চার পুত্র ছিলো- দধী রাম, পণ্ডিত রাম, আনন্দ রাম এবং গোলাপ রাম। যে ভবনগুলো বালিয়াটি প্রাসাদ নামে ইতিহাসে স্থান করে নিয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে, সেগুলো এই সাহা পরিবারের উত্তরিধারীগণই নির্মান করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়। অপরদিকে জমিদারীর অন্য অংশীদার রায় চৌধুরী পরিবার সম্পর্কে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এককেবারেই নীরব!
এলাকার উন্নয়নে এই সাহা পরিবারের কোন অবদান আছে কিনা তা কোথাও উল্লেখ নেই। তবে রয়েছে ভবন বিলাসিতার আনন্য উদাহরণ। সেকথা পরে বলছি। অন্যদিকে রায় চৌধুরী পরিবারের ভবন বিলাসিতার তেমন কোন চিহ্ন না থাকলেও শিক্ষা বিস্তারে তাদের অবদানের অন্যতম নিদর্শন আজকের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, যেটি জগন্নাথ কলেজ নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
উইকিপিডয়া ঘেঁটে জানা যায়, কিশোরীলাল রায় চৌধুরীর জন্ম ১৮৪৮ সালের ১৯ নভেম্বর। তিনি ১৯২৫ সালের ৩ জুলাই পরলোকগমন করেন। তিনি ১৮৫৮ সালে (মতান্তরে ১৮৬৮ সালে) ঢাকা ব্রাহ্ম স্কুল নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৭২ সালে স্কুলটির নাম বদলে জগন্নাথ স্কুল করা হয়, তার পিতার নামে। এও জানা যায় তিনি নিজে উচ্চ শিক্ষিত ছিলেন না। তবে শিক্ষাবিস্তারে অনেক অবদান রেখেছেন। জগন্নাথ স্কুলটি ১৮৮৪ সালের ৪ জুলাই জগন্নাথ কলেজ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এছাড়াও তিনি ঢাকার বাংলা বাজারে ১৮৮৭ সালে নিজ নামে কিশোরীলাল জুবিলী হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা করেন, যা সর্বত্র কে.এল. জুবিলী স্কুল নামে পরিচিত। নাট্য চর্চার উন্নতির জন্য মালঞ্চ নামে ঢাকায় তিনি একটি রঙ্গমঞ্চ গড়ে তোলেন। সেই রঙ্গমঞ্চটি পরবর্তীতে লায়ন সিনেমা নামে পরিচিতি লাভ করে। বালিয়াটিতে তিনি একটি দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করেন যা বর্তমানে সরকারী নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হচ্ছে।
এবারে সাহা পরিবারের অন্যন্য নিদর্শন বালিয়াটি প্রসাদ সম্পর্কে কিছু জানা যাক। প্রাসাদ চত্বরটি প্রায় ১৬,৫৫৪ বর্গমিটার জমির উপর ছড়িয়ে থাকা ৭টি দক্ষিণমুখী ভবনের সমাবেশ। ভবনগুলো খ্রিষ্টীয় মধ্য ঊনবিংশ শতক থেকে বিংশ শতকের প্রথমভাগের বিভিন্ন সময়ে জমিদার পরিবারের কয়েকজন সদস্যের দ্বারা নির্মিত হয়োছিল বলে ধারণা করা হয়। সামনের চারটি প্রসাদ ব্যবহৃত হতো ব্যবসায়িক কাজে। প্রধন প্রসাদগুলোর পেছনের প্রাসাদগুলোকে বলা হয় অন্দর মহল, যেখানে বসবাস করতেন তারা। বিশাল প্রাসাদগুলো ২০ একরের চেয়ে বেশি স্থান জুড়ে অবস্থিত ছিলো, যদিও বর্তমানে এর আয়তন ৫.৮ একক (তথ্যসূত্র- প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ)। একই রকম দেখতে কিন্তু পাঁচটি স্বতন্ত্র ব্লকের সমন্বয়ে গঠিত ছিলো, যার সর্ব পূর্বদিকের ব্লকটি কোন অস্তিত্ব এখন আর নেই। বর্তমানে চারটি ব্লক আছে যার মধ্যে মাঝের দুইটি ব্লক, যার একটি দ্বীতল বিশিষ্ট এবং আরেকটি টানা বারান্দা বিশিষ্ট যা তিনতল বিশিষ্ট।
প্রাসাদের চারটি ব্লকের পিছন অংশে চারটি আলাদা আভ্যন্তরিণ ভবন বা অন্দরমহল। উত্তরদিকে কিছুদূরে অবস্থিত পরিত্যক্ত ভবনটি কাঠের কারুকার্য সম্পন্ন। বিশাল প্রাসাদগুলোর চারপাশ সুউচ্চ দেয়াল দ্বারা পরিবেষ্টিত। এই প্রাসাদের চারটি প্রবেশপথ বা সিংহদ্বার রয়েছে। প্রত্যেকটিতে অর্ধবৃত্তাকার খিলান আকৃতির সিংহ মূর্তি রয়েছে। প্রসাদ কমপ্লেক্সের সর্বউত্তরে উত্তরে বিশাল আকৃতির পুকুর রয়েছে, যেখানে রয়েছ ছয়টি বাধানো ঘাট এবং দুটি সংযোগ খাল, ধারণা করা হয় পুকুরের পানি পরিস্কার রাখার জন্য কোন নদী বা খালের সাথে এর সংযোগ ঘটানো হয়েছিল। পুকুরের উত্তরে রয়েছে গণসৌচাগার। দুটি আলাদা ব্লকে ভাগ করা সৌচাগার দেখে মনে হয়- রাজ কর্মচারীদের শ্রণিভেদে এগুলো ব্যহার করতে দেয়া হতো। এও ধারণা করা হয় এবং স্থানীয়ভাবে শোনা যায়- জমিদার বাড়ির কর্মচারীগণ কাজে আসার সময় পুকুরে স্নান সেরে তবেই জমিদার বাড়িতে প্রবশাধিকার পেতো। সেজন্যই পুকুর পাড়ে গণসৌচাগার নির্মিত হয়েছিল।
বাড়িটিতে অনেকগুলো স্থাপনা রয়েছে যেগুলো পাঁচটি পৃথক ভাগে বিভক্ত। সর্বমোট আটটি সুবিশাল দ্বিতল ও ত্রিতল স্থাপনা রয়েছে। মূল প্রসাদের মধ্যবর্তী ভবনদুটোর ঠিক পেছনেই মূল অন্দরমহল। দেখ বোঝা যায় পেছনের ভবনগুলোর মধ্যে মূল ভবনের মধ্যবর্তী ভবন দুটোর পেছনের ভবন দুটো ছিলো জমিদারদের পারিবারিক বাসস্থান। বাকী ভবনগুলো খাস কর্মচানরীদের জন্য ব্যবহৃত হতো বলে মনে করা যেতে পারে। কোনটাবা অতিথিদের জন্য ব্যবহৃত হতো। তবে সঠিক তথ্য পাবার আর কোন উপায় এখন নেই। পেছনের বাকী ভবনগুলোর গঠনশৈলী মূল অন্দরমহল ভবন দুটো থেকে আলাদা। এর দ্বারাই বুঝে নেয়া যায় সেগুলো জমিদার পরিবারের সদস্যদের বাইরের অন্যান্যদের জন্য সংরক্ষিত ছিলো।
অনেক দূর থেকে এখনও দালানগুলোর চূড়া মন কাড়ে আগতদের। সময়ের ব্যবধানে ভবনগুলো ধ্বংসের প্রহর গুনলেও আজও ঠাঁয় দাঁড়িয়ে জানান দেয় বালিয়াটির জমিদারদের সেকালের সেই বিত্ত আর বৈভবের কথা। জমিদার বাড়িতে রয়েছে ছোট-বড় দুশোর বেশি কক্ষ। ধারণা করা হয় উত্তরের পুকুরের চারপাশের সারিবদ্ধ কক্ষগুলো ছিল পরিচারক, প্রহরী ও অন্যান্য কর্মচারীদের থাকার জন্য।
মানিকগঞ্জের সরকারী ওয়েব সাইটে জানা যায়, জমিদার হীরালাল রায় চৌধুরী সাটুরিয়া থেকে বালিয়াটির প্রবেশ পথের পাশে কাউন্নারা গ্রামে একটি বাগানবাড়ী নির্মাণ করেন এবং সেখানে দিঘির মাঝখানে একটি প্রমোদ ভবন গড়ে তোলেন যেখানে সুন্দরী নর্তকী বা প্রমোদ বালাদের নাচগান ও পান চলতো। আমরা সেই গ্রামে যেতে পারিনি। আগামীতে কোন এক সময়ে এর সন্ধান করবো।
জগন্নাথ কলেজ প্রতিষ্ঠায় বালিয়াটি জমিদারদের কথা সর্বত্র প্রচারিত, তবে ইতিহাসের কোথাও পেলাম না জমিদারদের ১০ আনা ৬ আনা মালিকানা ভাগের তথ্য। স্থানীয়ভাবেই বিষয়টি জানা যায়। আশাকরি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করবে।
সাটুরিয়াতে থাকার মতো তেমন কোন আবাসিক হোটেল নেই। দিনে দিনে প্রাসাদ দেখে ফিরে আসতে হবে। দূরের পর্যটকদের মানিকগঞ্জ বা সাভারে থাকার জায়গা খুঁজে নিতে হবে।
ঢাকার গুলিস্তান থেকে মানিকগঞ্জগমী বাসে প্রায় ঘন্টা দুয়েকের ভ্রমণ করে নামতে হবে কালামপুর বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকসা, ব্যাটারি চালিত অটো-রিকসা, ব্যাটারি চালিত ভ্যানগাড়ি কিংবা সাটুরিয়ার বাসে চেপে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টায় পৌঁছেনো যায় বালিয়াটি রাজপ্রাসাদ। এছাড়া গাবতলি-আমিন বাজার থেকে সরাসরি সাটুরিয়ার বাস পাবেন। সেক্ষেত্রে সাটুরিয়া নেমে ব্যাটারি চালিত ভ্যান গাড়িতে বালিয়াটি পাঁচ মিনিটের পথ। তবে নিজস্ব বাহন হলে ভ্রমণ সবচেয়ে বেশি আনন্দদায়ক।
আমরা রায় চৌধুরী পরিবারের বাড়ির ধ্বংসাবশেষ দেখে ফেরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। ইতিহাসের এক অজানা অদ্যায় সম্পর্কে জানার অতৃপ্তি নিয়ে ফিরে এলাম জাহাঙ্গীরনগর। তখন সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত প্রায় প্রথম প্রহর শেষ হওয়ার পথে।