সেই যে গাঁয়ের দিনগুলি মোর আসবে কি আর ফিরে?
ছোট্ট বেলার স্মৃতি মনে জাগছে বারে বারে।
দাদার বাড়ীর পুকুর ছিল কচুরিপানায় ভরা,
শাপলা ফুলের গন্ধ ছিল হৃদয় মাতাল করা।
গাছের ডালে বসে ঘুঘু গাইতো মধুর গান,
সেই গানেতে হারিয়ে যেত আমার মন ও প্রাণ।
পুকুর পাড়ের এক ধারেতে ছিল বাঁশের ঝাড়,
জোনাকিরা জ্বলতো সেথায় হলে রাতে আঁধার।
বড় দীঘির ঝোঁপটি ঘিরে মাছরাঙাদের খেলা,
ডাকত ডাহুক, বকের ছানা নিত্য সাঁঝের বেলা।
ভর দুপুরে সব সাথীরা আসত কাঁঠাল তলা,
বসতো সেথা নিত্য দিনে বনভোজনের মেলা।
ক্ষেতের থেকে একটু দূরে ছিল চিকন খাল,
গাঁয়ের ছেলে ফেলতো সেথা ছোট্ট মাছের জাল।
দেখতাম আমি অবাক চোখে বিশাল মাছের ঝাঁক,
আটকে যেত সেই জালেতে থাকতো নাকো ফাঁক।
কত কথাই মনে পরে কত যে সেই হাঁক,
মনে পরে কাকী ফুফুর মিষ্টি মধুর ডাক।
খুব ভোরেতে দাদুর ডাকে ভাঙ্গতো আমার ঘুম,
ভোর সকালেই হতো শুরু পিঠে তৈরির ধুম।
ধাপুর ধুপুর ঢেঁকির ঢোলে নাচতো আমার মন,
গুঁড়ো চালের মিষ্টি গন্ধ ভাসতো হাওয়ায় তখন।
দাদি আমার দিতেন এনে বাটি ভরা দই,
তারই সাথে থাকতো আরো চিকন ধানের খই।
আজকে যখন সেই গাঁয়েতে আবার ফিরে যাই,
খুঁজে দেখি হায়রে আমার আগের মানুষ নাই।
নতুন দিনের নতুন মানুষ নেই পুরাতন কিছু,
স্মৃতিই শুধু বেঁচে আছে ছাড়ছে না সে পিছু।