অনাকাঙ্খিত কোভিড-১৯ দেশের গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে ফেলেছে। নিয়মিত পাঠদান বন্ধ থাকায় নির্দিষ্ট সময়ে সিলেবাস শেষ করার তেমন কোন সুযোগ নেই। বিঘিœত হওয়ার আশংকা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া। এছাড়া উচ্চ শিক্ষা স্তরে সেশন জটও সৃষ্টি হতে পারে। করোনা প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় প্রায় অচল হয়ে পড়েছে দেশের সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থা। দীর্ঘ ছুটিতে প্রাথমিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের শ্রেণীতে পাঠদান ও পরীক্ষা সহ সকল শিক্ষা কার্যক্রম সম্পুর্ন বন্ধ। অবশেষে এসএসসি পারীক্ষার ফলাফল ৩১ মে প্রকাশিত হলেও এইচএসসি পরীক্ষা বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত এখনো জানা যায়নি।
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় ১৭ মার্চ থেকে কয়েক দফা বাড়িয়ে ৬ আগস্ট পর্যন্ত দেশব্যাপি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। এ নির্দেশনার প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের পাঠক্রমিক কার্যক্রম বর্তমানে বন্ধ। সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন-এ পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হলেও তা বাংলা ভার্সনের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য হওয়ায় অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য নিজেদের তত্ত্বাবধানে পাঠক্রমিক কার্যক্রম শুরুর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। আলোচ্য সময়ে শিক্ষার্থীদের পাঠক্রমিক কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত রাখার মননে ও মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়নে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন স্কুল এন্ড কলেজের পাঠদান কার্যক্রম অনলাইনে শুরু হয়।
অনলাইন কোর্সের ধারণাটি নতুন নয়। তবে আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের নিকট অনলাইন ভিত্তিক কোর্স পরিচালনা করা একটি নতুন অভিজ্ঞতা। সে হিসেবে এদেশের শিক্ষার্থীদের জন্যও এটি সম্পূর্ণ নতুন অভিজ্ঞতা। অনলাইন ভিত্তিক কোর্সগুলো নিয়ে অনেক প্রশ্ন ও আলোচনা থাকলেও সারা পৃথিবীতেই দিনে দিনে এর চাহিদা ব্যাপক হারে বাড়ছে। আধুনিক পাঠদান পদ্ধতি আর আধুনিক অ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতির প্রচলনের সাথে সাথে অনলাইন কোর্সের গ্রহণযোগ্যতা ক্রমেই বাড়ছে। বিশ্বব্যাপী অনেক শিক্ষার্থীর জন্য ভার্চুয়াল শিক্ষা ব্যবস্থা সুযোগ তৈরি করেছে- বাড়িতে বসে বা অন্য দেশে থেকে বিশ্ব র্যাংকিংয়ে উপরের সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে পরিচিত হওয়ার। বিগত বছর কিছু বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের ক্যাম্পাস ভিত্তিক কোর্সের সাথে সাথে অনলাইন ভিত্তিক কোর্স অফার করা শুরু করলে এই অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। তবে অনলাইন ভিত্তিক পাঠদান সব বিষয়ের জন্য কিংবা সবার জন্য প্রযোজ্য না হলেও শিক্ষকের উপস্থাপনা ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এটি বেশিরভাগ বিষয়ের জন্য উপযোগী করে তুলতে পারা সম্ভব।
যেকোন প্রতিকুল অবস্থাকে অনুকূলে নিতে পারাটা এক ধরনের সফলতা। অর্থাৎ সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে খাইয়ে চলতে হবে তা না হলে ছিটকে পরার সম্ভাবনা রয়েছে। করোনাকালে যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ তখন শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করাটা যে কঠিন কাজ তা আমরা বড়রাই আঁচ করতে পারি। এমন সময়ে শিক্ষার্থীদের কর্মচঞ্চল রাখতে শুরু করি অনলাইন একাডেমিক কার্যক্রম। ২৬ এপ্রিল ২০২০ ÔFDASC – Faridpur Zila Proshason School and CollegeÕ ইউটিউব চ্যানেলটি ওপেন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করেছেন মোট ১১৫ জন। মোট ১০৪টি ভিডিও ক্লাস তৈরী, সম্পাদনা ও আপলোড করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্লে থেকে তৃতীয় শ্রেণির সেকেন্ড সেমিস্টারের সিলেবাস সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। এখন পর্যন্ত ক্লাস ভিউ করেছেন ৪৯৪১জন! এছাড়া আলোচ্য সময়ে জুম ক্লাউড অ্যাপসের মাধ্যমে ক্লাস নেওয়া হয়েছে ৩৩টি। একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসারে আরো ২৪টি জুম ক্লাসের মাধ্যমে সেকেন্ড সেমিস্টারের ক্লাস গ্রহণ সম্পন্ন করার প্রস্তুতি রয়েছে। যেহেতু আমাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বয়সে ছোট তাই শুরুতে অভিভাবকদের জুম অ্যাপের সাথে পরিচিত করে নিতে তথা তাদের মতামত গ্রহণের জন্য ৩বার প্যারেন্টস মিটিং আয়োজন করা হয়েছে। এরপর থেকে শিক্ষার্থীদের জুম ক্লাসে তুলনামূলক বেশী সংখ্যায় উপস্থিতি নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।
অন্যদিকে ফেইসবুকের মাধ্যমে অনলাইনের একাডেমিক কার্যক্রম সমন্বয় করা হচ্ছে। কারণ, এই মাধ্যমে প্রায় সকলের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়। কেউ যদি সপ্তাহে একবারও ই-মেইল ইনবক্স না দেখেন তেমন মানুষও দিয়ে কয়েকবার ফেইসবুকে ঢুঁ মারেন। www.facebook.com/fdasc.edu.bd এই পেইজটি সকলের জন্য উন্মুক্ত। এই পেইজে এখন পর্যন্ত লাইক রয়েছে ৮১৯টি, ফলোয়ার্স ৮৬০ জন। মাত্র কয়েকমাসের প্রতিষ্ঠান আমাদের। এর মধ্যে এমন সংখ্যক ফলোয়ার্স আমাদের কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। এই পেইজে নিয়মিতভাবে ক্লাসের আগেরদিন অনলাইন ক্লাস রুটিন আপলোড করা হয়। সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনের ক্লাস রুটিন আগেরদিন আপলোড করা হয়। ফরিদপুর জেলা প্রশাসন ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট শেয়ার করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন সচেতনতামূলক ও একাডেমিক পোস্টও গুরুত্বের সাথে শেয়ার করা হয়। আলোচ্য সময়কালে ৫বার ‘মিট দ্য প্রিন্সিপাল’ কার্যক্রমের আওতায় আমি লাইভ প্রোগ্রামে সমসাময়িক কার্যক্রম সম্পন্নে করণীয় ও দিক নির্দেশনা প্রদান করেছি। এছাড়া সরাসরি প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন তথ্য নিশ্চিত করার চেষ্টাও করা হয়েছে।
এ সময়ে শিক্ষার্থীদের পাঠক্রমিক কার্যক্রম সহজতর করার নিমিত্ত টিচার্স নোট প্রদান করা হয়েছে। অনলাইনে ২টি মাসিক পরীক্ষা এবং ফার্স্ট সেমিস্টার পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে একদম বিনা ফিতে। ঈ-উল-আযাহা’র পর সেকেন্ড সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার তারিখ ইতোমধ্যে শিক্ষঅর্থীদের জানানো হয়েছে এবং তারা সকলেই সে মোতাবেক প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। শিক্ষার্থীদের মনোবল বাড়াতে অনলাইন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে তারা কোভিড-১৯ এর উপর সচেতনতামূলক ভিডিও বার্তা তৈরী করেছে, সঠিক নিয়মে হাত ধোয়ার উপায় বিষয়ে ভিডিও পাঠিয়েছে এবং ঈদ কার্ড অঙ্কণ করে নির্ধারিত প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করেছে। কেউ কাউকে দেখছেনা তবে প্রতিযোগিতা চলছে; এ যেন এক ভিন্ন রকমের প্রতিযোগিতা।
পাঠক্রমিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার নিমিত্ত জুলাই এবং আগস্ট ২০২০ মাসের সংশোধিত একাডেমিক ক্যালেন্ডার সহজ করে প্রণয়ন করা হয়েছে। এ একাডেমিক ক্যালেন্ডারটি সকল অভিভাবকের ই-মেইলে প্রেরণ করা হয়েছে। কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব না কমলে বছরের শেষ ভাগের (৩য় সেমিস্টারের) কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য একাডেমিক ক্যালেন্ডার বাস্তবায়নযোগ্য করে প্রণয়ন করার প্রস্তুতি রয়েছে। সফলভাবে কার্যক্রম বাস্তবায়নের নিমিত্ত অনলাইন মাধ্যমে সময়ে সময়ে টিচার্স মিটিং এবং একাডেমিক অ্যাডভাইজরি কমিটির মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিক নির্দেশনা দিয়ে সবসময় পাশে থেকেছে প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ- জেলা প্রশাসন। মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়নে শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রশিক্ষণ প্রদান করেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি)। ইতোমধ্যে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে এবং পত্রিকায় গুরুত্বের সাথে এ প্রতিষ্ঠানের অনলাইনে একাডেমিক কার্যক্রম প্রচারিত হওয়ার ফলে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ সময়কালে কাব স্কাউটদের দীক্ষা প্রদানের উপযোগী করে গড়ে তুলতে অনলাইনে ‘সদস্য ব্যাজ’ এর উপর লিখিত মূল্যায়ণ গ্রহণ করা হয়েছে। ঈদ-উল-আযাহা’র পর উত্তীর্ণদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। স্কাউট শপ হতে প্রত্যেক কাব স্কাউটের জন্য দু’টি করে বই (মাই প্রোগ্রেস, সদস্য ব্যাজ) সংগ্রহ করে তাদের দেয়া হয়েছে। কোভিড-১৯ সময়কালে নিজ নিজ বাড়ীতে সুযোগ থাকা সাপেক্ষে কাব স্কাউট প্রোগ্রামের অত্যাবশ্যকীয় দক্ষতা সাঁতার শেখার জন্য সকলকে অবহিত করা হয়েছে এবং ইতোমধ্যে কয়েকজন সাঁতার শেখা সম্পন্ন করেছে। গ্রæপের কাব স্কাউটরা বাংলাদেশ স্কাউটসের অনলাইন পারদর্শিতা ব্যাজ কোর্সে অংশগ্রহণ করেছে। এছাড়া অন্যান্য অনলাইন কার্যক্রমেও তারা অংশগ্রহণ করছে। অভিভাবকদের কাছে থেকে এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া মিলছে। বাংলাদেশ স্কাউটসের জাতীয় সদর দফতরের অনলাইন রেজিস্ট্রেশন সিসটেম-এ ফরিদপুর জেলা প্রশাসন স্কুল এন্ড কলেজ স্কাউট গ্রæপ এর নাম ইতোমধ্যে যুক্ত করা হয়েছে। নৈতিক কার্যক্রম তথা ভালো কাজ বাসায় অনুশীলনের জন্য প্রতিটি শিক্ষার্থীকে একমাসের বাস্তবায়নযোগ্য অ্যাসাইনমেন্ট ই-মেইলে প্রেরণ করা হয়েছে।
বিশ্বের ১৮৮টি দেশে যখন ১.৫৮ বিলিয়ন শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সরাসরি পাঠগ্রহণ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে। তখন বাংলাদেশে এর সংখ্যা প্রায় ৪০ মিলিয়ন! ইউনেস্কোর মতে- বাংলাদেশের প্রাথমিকে ১৭.৩৩ মিলিয়ন, মাধ্যমিকে ১৫.৮৬ মিলিয়ন, এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ৩.১৫ মিলিয়ন শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম কোভিড-১৯ প্রতিরোধের অংশ হিসেবে সরকারের নির্বাহী আদেশে বন্ধ আছে। আমেরিকার কয়েকটি স্টেট এক বছরের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে।
জীবনের পাশাপাশি প্রায় সর্বক্ষেত্রেই কোভিড-১৯ দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে। এ আপদকালীন সময়ে উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনেকেই অনলাইন ক্লাসে পাঠদান প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আশার কথা হলো, পড়ালেখার ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থে আমাদের দেশেও বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুল পর্যায়ে শুরু হয়েছে অনলাইন বা ভার্চুয়াল ক্লাস। এক্ষেত্রে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে- জুম ক্লাউড অ্যাপস, গুগল ক্লাসরুম, গুগল মিট, মেসেঞ্জার, স্কাইপে ইত্যাদি লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেইসবুক লাইভের মাধ্যমে পরিচালনা করছে বিভিন্ন ক্লাস; শেয়ার করছে অনলাইন কন্টেন্ট ও শিক্ষা সামগ্রী। শিক্ষার্থীদের পাঠদানের পাশাপাশি প্যারেন্টস মিটিং, বিভিন্ন কমিটির সভা, শিক্ষার্থী মনিটরিংয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম। এমন সময়ে প্রতিষ্ঠানের বাহিরেও নিজ উদ্যোগে অনেক শিক্ষক বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থায় পাঠদান প্রক্রিয়া বজায় রেখেছেন।
অনলাইন পাঠদানের সাথে ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি এবং ইন্টারনেট ইফ্র্রাস্ট্রাকচার ইস্যু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। উন্নত দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না। আমাদের টেলিকম কোম্পানিগুলো উদ্ভট প্যাকেজের প্রসারে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করলেও শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পাঠ গ্রহণের জন্য কোনো স্পেশাল প্যাকেজ প্রচলনের জন্য এখনো চিন্তা করেননি, যা অবশ্যই দুর্ভাগ্যজনক। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেলিটক, বর্ণমালা বা অপরাজিতার মত প্যাকেজ চালু করলেও তার কানেকটিভিটি জেলা শহরেই পাওয়া যায় লো স্পিডে।
শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য যখন আচরণের কাঙ্খিত পরিবর্তন তখন নম্বর ভিত্তিক মূল্যায়ণ থেকে হয়ত আমাদের বের হয়ে আসার সময় এসেছে। শিক্ষা হোক মানুষবান্ধব, প্রকৃতিবান্ধব। একলা ছোটার মানসিকতা পরিবর্তন হোক। এখন চিন্তা করার সুযোগ এসেছে একা নয় একসাথে চলার; যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেরোনো শিক্ষার্থী মানবিক গুণ সম্পন্ন মানুষ হিসেবে তৈরী হয়। প্রতিটি শিক্ষার্থীর যুদ্ধ কিংবা প্রতিযোগিতা করার আদর্শিক জায়গা হোক তার নৈতিকতা ও মূল্যবোধ। সার্বজনীন মানবিক মূল্যবোধ (যেমনঃ সম্মান, সততা, ন্যয় বিচার, সমতা, সমবেদনা, সহযোগিতা ও সহনশীলতা) হোক মূল্যায়নের মাপকাঠি। প্রতিটি বিদ্যালয় হোক প্রকৃতির পাঠশালা। প্রকৃতি ফিরে আসুক সজীবতার প্রাণ প্রাচুর্যে ভরে। কোভিড-১৯ মহামারিই আমাদের দেখাক আমি থেকে আমরা হয়ে ওঠার পথ।
লেখক: অধ্যক্ষ, ফরিদপুর জেলা প্রশাসন স্কুল এন্ড কলেজ, ফরিদপুর-৭৮০০।