বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টুকুতেই পাকিস্তানী হানাদারবাহিনী কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের-গুণী ও মুক্ত বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়। ১৯৭১ সালে ত্রিশ লক্ষ মা বোনের ইজ্জৎ ও জীবনের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আর এই স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদ হন বহু কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কলামিস্ট, অধ্যাপকসহ হাজারো সামাজিক সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব। বিভিন্ন সময় এদের নিয়ে নির্মিত হয়েছে নানা ধরনের চলচ্চিত্র, নাটক, ভাশকর্জ আর নামকরন করা হয়েছে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, ছাত্রাবাস, স্টিডিয়াম এবং রাস্তার। এর পরেও সকল প্রকার রাষ্ট্রীয় আয়োজন থেকে বাদ পড়েছে বাংলাদেশের প্রথম শহীদ মহিলা কবি মেহেরুন্নেসা।
কবি মেহেরুন্নেসা ১৯৪২ সালের ২০ আগস্ট কলকাতার খিদিরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব কেটেছে কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে। পিতা-আবদুর রাজ্জাক, মাতা- নূরুন নেসার, চার সন্তানের এই পরিবারের কনিষ্ঠা কন্যা মেহেরুন্নেসা। বড় বোন মোমেনা খাতুন, ছোট দুই ভাই রফিকুল ইসলাম বাবলু ও শহিদুল ইসলাম টুটুল। তখন অন্য শিশুদের মতো তাঁর স্কুলে যাওয়া হয়নি। ঐখানে মুসলমান মেয়েদের লেখাপড়ার কোন সুযোগ ছিল না। স্কুলে ভর্তি হলেও মুসলমান বলে কয়েক স্কুল থেকে তাঁকে বের করে দেয়া হয়। তার বড় বোন মোমেনা বেগম বিভিন্ন স্কুলে সামান্য পড়াশুনার সুযোগ পেয়েছিলেন। ফলে বাবা এবং বড় বোনের উৎসাহে ঘরে বসে তিনি লেখাপড়া শুরু করেন। এবং স্বশিক্ষায় শিক্ষীত হন। মেহেরুন্নেসাদের (কলকাতার) কালিবাজারে কাপড় ও ভবানীপুরে বড় জুতোর দোকান ছিল। দোকানের আয়ে তাদের সংসার ভালই চলছিল। সাতচল্লিশের দাঙ্গায় পুড়িয়ে দেয়া হয় দোকান এবং লুট হয়ে যায় বাড়ি। নিঃস্ব হয়ে পড়েন তারা। এসময় জীবিকার জন্য কয়লার দোকানে বাবার সাথে কাজ করতেন শিশু মেহেরুন্নেসা। বাঙালি মুসলিম পরিবার এ দৃশ্যে অভ্যস্ত ছিল না। ফলে পার্শ্বের দোকানদারসহ অনেকে অবাক হয় এবং বিরোধীতা করে। তবে আধুনিক ও উদার মনের আবদুর রাজ্জাক এটাকে খুব সহজভাবে গ্রহণ করেছিলেন। তখন থেকেই পেশা, জাতি-ধর্ম-বিত্ত নির্বিশেষে মেহেরুন্নেসা মানবিকতার ঔদার্যে বড় হতে থাকেন। তবে অভাব আর দুর্ভাগ্যের সঙ্গে লড়াইটা তিনি শুরু করেন সেই শৈশবে। শেষ পর্যন্ত টিকতে না পেরে ১৯৪৭ সালে বিভক্ত ভারতে সা¤প্রদায়িক দাঙ্গায় সব হাড়িয়ে নামমাত্র মূল্যে বাড়ি বিক্রি করে স্বপরিবারে ১৯৫০ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান বা বাংলাদেশে চলে আসেন। জানা যায় তাদের বাড়িটি বর্তমানে ঐখানকার বিধানসভার কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
বাংলাদেশে প্রথমে তাঁর পরিবার পুরানো ঢাকার তাঁতিবাজার এলাকায় একটি ছোট্ট ভাড়া বাসায় ওঠেন। দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের সহায়তায় আবদুর রাজ্জাক শুরু করেন কাগজের ব্যবসা। এতে সুবিধা না হওয়ায় তিনি নাবিস্কো কোম্পানিতে এবং পরে হক কোম্পানিতেও সামান্য বেতনে চাকরি করেন। ১৯৫৪ সালে ভাল ঘরে বড় বোন মোমেনা বেগমের বিয়ের পর মেহেরুন্নেসা প্রিয় বাবাকে সাহায্য করার জন্য শুরু করেন কঠোর পরিশ্রম। সংসার পরিচালনার জন্য তিনি বাংলা একাডেমীতে অনুলিখনের কাজ করতেন। দীর্ঘদিন অসুখে ভুগে ১৯৬৯ সালে পিতা আবদুর রাজ্জাক ক্যান্সারে মৃত্যুবরন করেন, মা ও দুই ভাইয়ের দায়িত্ব এসে পড়ে তাঁর কাঁধে। ভাল জায়গায় থেকে বিবাহের প্রস্তাব আসার পরেও ফিরিয়ে দেয়া হয়েছিল তার পরিবার ও কবি প্রতিভার কারনে। তিনি সেই দায়িত্বের বেড়াজালে আটকা থেকেই চালিয়ে গিয়েছিলেন নিজস্ব কাব্য চর্চার ব্রত।
মেহেরুন্নেসার কবি প্রতিভার প্রকাশ ঘটে খুব ছোট বেলায়। ১৯৫২ সালে মাত্র দশ বছর বয়স থেকেই অসাধারণ প্রতিভার পরিচয় দেন তার খুরধার লেখনির মাধ্যমে এবং জায়গা করে নেন সংগ্রাম, ইত্তেফাক, দৈনিক পাকিস্তান, অনন্যা, কাফেলা, বেগম, যুগের দাবীসহ তৎকালীন প্রায় সকল পত্রিকায়। বিড়বিড় করে কী যেন বলতেন সব সময়। তখন না গেলেও পরে বোঝা গিয়েছিল যে, ছড়া বা কবিতা আওড়াতেন তিনি। মাত্র দশ বছর বয়সে ১৯৫২ সালে তাঁর ‘চাষী’ কবিতা সংবাদ-এর ‘খেলাঘর’ পাতায় প্রকাশিত হয়। তিনি বড়দের জন্য লেখা শুরু করেন ১৯৫৪ সালে ‘কাফেলা’ পত্রিকায় প্রকাশিত কবিতায় আমরা উচ্চারিত হতে দেখি অন্য এক মেহেরুন্নেসাকে: ‘রাজবন্দী’ শিরোনামের কবিতায় ‘আমাদের দাবি মানতে হবে, রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’-এর মতো বক্তব্যে। এর জেরে গোয়েন্দাদের নজরে পড়েন। এ সময় থেকেই তাঁর কবিতা প্রকাশিত হতে শুরু করে ইত্তেফাক, দৈনিক পাকিস্তান, মাসিক মোহাম্মদী, কৃষিকথা, ললনাসহ মূলধারার পত্রপত্রিকায়। এই কবিতা ছাঁপা হওয়ার পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে আসেন কিন্তু ছোট মেহেরুন্নেসাকে দেখে চলে যান এবং বাবাকে বলে যান ও কে লেখা বন্ধ করার জন্য। এরপরে অনেকদিন সকল প্রকার লেখা বন্ধ রাখেন। কবি মেহেরুন্নেসার রুচি, ব্যক্তিত্ব, সৌন্দর্য ও কবিতা সমান্তরাল। তাঁর কর্ম, বিশ্বাস এবং বিবক্ষাই তার কবিতা। প্রথমে তাঁর কবিতায় ফররুখ আহমদ-এর প্রভাব, ইসলামী ভাবধারা, আরবি-ফার্সি শব্দের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। তাঁর বেশিরভাগ কবিতা প্রকাশিত হয় ‘বেগম’ প্রত্রিকায়। বেগম পত্রিকার সম্পাদক নূরজাহান বেগমের পরামর্শে তিনি স্বদেশ, প্রেম ও প্রকৃতি বিষয়ে আরবি-ফার্সি শব্দের ব্যবহার বর্জন করে কবিতা লিখতে শুরু করেন। ধানের কান্না শুনেছো কখনো তুমি/ ভয়াল পল্লাবনে পল্লাবিত হয়েছে শত শস্যের ভূমি/সেই দুর্যোগ দিনেরা যখন একে একে আসে নামি/আমার দেশের জনতা তখন দুর্বার সংগ্রামী। তিনি রানু আপা নামে ‘পাকিস্তানী খবর’-এর মহিলা মহল পাতার সম্পাদনা করতেন। কবি হিসাবে তিনি ছিলেন সত্যিকার কবিতাকর্মী। খুব আত্মবিশ্বাস ও সাহসিকতা, তাঁর কবি প্রতিভা আদায় করে নিয়েছিল কবি সুফিয়া কামালের স্নেহ আনুকূল্য। যাতিনি তাঁর কবিতায় প্রকাশ করেন……..
কুমারী কিশোরী শাহানা রঙের মেহেদী লাগেনি হাতে
জালিম কাফের পিশাচেরা সেই হাতে অসহায়া মেয়ে মোর।
শানিত ছুরিকা হানিয়া কণ্ঠে তোর।
তান্ডবলীলা শুরু করেছিল, রক্ত বসনা তুই
পুত পবিত্র এক মুঠি ফুুল; শেফালী-চামেলী-জুঁই!
ভালোবেসেছিলি এই ধরণীরে, ভালোবেসেছিলে দেশ
তাই বুঝি তোর কুমারী তনুতে জড়ায়ে রক্ত বেশ
প্রথম শহীদ বাংলাদেশের মেয়ে
দু’টি ভাই আর মায়ের তপ্ত বক্ষরক্তে নেয়ে
দেশের মাটির ’পরে
গান গাওয়া পাখি, নীড় হারা হয়ে
লুটালি প্রবল ঝড়ে।
ঝড় থেমে গেছে বাংলাদেশের কেটেছে অন্ধকারে।
সোনা ঝরা এই রোদের আলোকে তুই ফিরবি না আর।
১৯৬১ সালে যোগ দেন ফিলিপ্স রেডিও কোম্পানিতে। এছাড়া তিনি ইউএসআইএস লাইব্রেরিতেও অনুলিখনের কাজ নিয়েছিলেন। উল্লেখ্য যে, সে সময় ফিলিপস ইংরেজি ও উর্দুদতে মুখপত্র ছাপাতো, কবি মেহেরুননেসার চেষ্টায় বাংলা ভাষায় রচিত পত্রিকাও প্রকাশে বাধ্য হয় ফিলিপস কর্তৃপক্ষ। কবিতার প্রতি ভালোবাসা, বাংলা সাহিত্যের প্রতি অকৃত্রিম আকর্ষণ তাকে সাহিত্য চর্চা থেকে দূরে থাকতে দেয়নি। রানু আপা ছদ্মনামে রাজনৈতিক প্রবন্ধ লিখেছেন ৬৯ এর আইয়ুব বিরোধী উত্তাল গণআন্দোলনে। নিজের চেষ্টায় তিনি মিরপুরের ৬ নং সেকশনে, ডি বল্কের ৮ নং বাড়িটি বাবার নামে বরাদ্দ পান। ১৯৬৩ সালে কবি মেহেরুন্নেসা সপরিবারে বসবাসের জন্য ওই বাড়িতে ওঠেন। ১৯৬৫ সাল থেকে তারা থাকতে শুরুকরেন মিরপুরে। সেসময় মিরপুর বিহারী অধ্যুষিত এলাকা। বাঙালি পরিবার বিহারীদের তুলনায় নগণ্য। এর কিছু দিনের মধ্যে তাঁর বাবা অসুখে পড়েন। তখন তাঁকে আরো বেশি পরিশ্রম করতে হয় পরিবারের জন্য।
একাত্তরে বিহারি অধ্যুষিত মিরপুরে কবি কাজী রোজীর (সাবেক সংসদ সদস্য) নেতৃত্বে এ্যাকশন কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির সক্রিয় সদস্য ছিলেন কবি মেহেরুন্নেসা। কবি কাজী রোজী কবি মেহেরুন্নেসার স্মরণে কবিতায় বলেন….
তোমার দুটি হাতকে যখন প্রসারিত হতে দেখি
প্রতিটি রেখায় রেখায় যেন সোচ্চার প্রতিবাদ ভাসে
তোমার মনের গভীর যখন উদ্বেল উন্মুখ…..
ঘুম কাড়া কোনো সন্ধ্যা মালতী
নিঃশব্দে তোমাতেই হাসে
তোমার ¯^চ্ছ বিবেক যখন অবারিত হয়
বর্ষ ভেজা কাদা মাটির ঘ্রাণ
হেমন্ত বয়ে আনে চাষীর কাছে
তোমার অস্তিত্বটুকু উপলব্ধিতে এলে
বার বার মনে হয় সেদিনের কথা।
আমি তোমার দু’টি হাতকে প্রসারিত হতে দেখি
কুমারী রাতের রেখায় রেখায় প্রস্ফুটিত হয়
ছন্দ-চিত্র রূপ।
১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে লেখক সংগ্রাম শিবির আয়োজিত বিপ্লবী কবিতা পাঠের আসরে হাসান হাফিজুর রহমান, আহসান হাবীব, শামসুর রাহমান, সৈয়দ শামসুল হক, আলাউদ্দিন আল আজাদ, হুমায়ুন কবিরসহ অন্যান্য কবিদের সঙ্গে স্বরচিত কবিতাপাঠে অংশ নেন মেহেরুননেসা। এ আসরে সভাপতিত্ব করেছিলেন ড. আহমদ শরীফ। সেই অনুষ্ঠানে তিনি জনতা জেগেছে কবিতাটি আবৃত্তি করেন। বিহারী অধ্যুষিত মিরপুরে তিনি ও তার পরিবার… অনেক আগে থেকেই চিহ্নিত হয়ে ছিলেন মুক্তিকামী বাঙালি হিসেবে। ২৭ মার্চ এলো, দুদদিন আগেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় তখন একতরফা গণহত্যা শুরু হয়ে গিয়েছিল। কবি মেহেরুন্নেসা বিহারিদের হুশিয়ারি উপেক্ষা করে, তার দুই ভাই মিরপুর ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্য রফিক ও টুটুলকে নিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে সর্বদলিয় ছাত্র সংগ্রাম পরিশদের ডাকা কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২৩ মার্চ সকাল ১০ ঘটিকায় মিরপুরের ৬ নম্বর সেকশনের ডি-ব্লক, ১২ নম্বর রোডে নিজ বাড়িতে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করেন। এবং ঐদিন বেগম পত্রিকায় প্রকাশিতহয় তাঁর লেখা শেষ কবিতা (তাকে মারার মাত্র তিন দিন পূর্বে) জনতা জেগেছে……
মুক্তি শপথে দীপ্ত আমরা দুরন্ত দুর্বার,
সাত কোটি বীর জনতা জেগেছে এই জয়-বাংলার।
পাহাড় সাগর নদী প্রান্তর জুড়ে-
আমরা জেগেছি নব চেতনার ন্যায্য নবাঙ্কুরে
বাঁচবার আর বাঁচাবার দাবী দীপ্ত শপথে জলি-
আমরা দিয়েছি সব-ভীরুতাকে পূর্ণ জলাঞ্জলী-
কায়েমি স্বার্থবাদীর চেতনা আমরা দিয়েছি নাড়া
জয় বাঙলার সাত কোটি বীর,মুক্তি সড়কে খাড়া।
গণতন্ত্রের দীপ্ত শপথ কন্ঠে কন্ঠে সাধা-
আমরা ভেঙ্গেছি জয় বাঙলার বিজয়ের যত বাধা।
কায়েমি স্বার্থবাদী হে মহল কান পেতে শুধু শোন
সাত কোটি জয় বাংলার বীর ভয় করিনাকো কোন।
বেয়নেট আর বুলেটের ঝড় ঠেলে-
চির বিজয়ের পতাকাকে দেবো, সপ্ত আকাশে মেলে।
আনো দেখি আনো সাত কোটি এই দাবীর মৃত্যু তুমি,
চির বিজয়ের অটল শপথ “জয় এ বাংলা ভুমি”।
এই অপরাধে ২৭ মার্চ তাঁর মা, দুই ভাই ও তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। হত্যার সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ঊনত্রিশ বছর। মেহেরুন্নেসার ছোট দুই ভাইয়ের কাটা মাথা দিয়ে ফুটবল খেলা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী মিরপুরের আলী আহাম্মদের ভাষ্যমতে কবি মেহেরুন নেসাকে চুলের মুঠি ধরে উঠানে এনে রামদায়ের এক কোঁপে গলা কেটে ফেলে। মেহেরুন নেসার কাটা মাথার বেনি করা চুল ফ্যানের সাথে ঝুঁলিয়ে ফ্যান ছেড়ে দেয়া হয় কাটা মস্তকের রক্ত ছিটিয়ে উল্লাস করা হয়। এই ভাবেই কবি মেহেরুন নেসা হন স¦াধীনতা সংগ্রামে বাংলাদেশের প্রথম শহীদ মহিলা কবি।একাত্তরের ২৭ মার্চ কাদের মোল্লা তার সহযোগীদের নিয়ে কবি মেহেরুন্নেসা, তার মা এবং দুই ভাইকে মিরপুরের বাসায় গিয়ে হত্যা করেন হত্যাকারী। ট্রাইব্যুনালের রায়ে এ বিষয়ে বলা হয়, সহযোগীদের নেতৃত্ব দেয়ার মাধ্যমে কাদের মোল্লা এ হত্যাকাণ্ডে ‘নৈতিক সমর্থন’ ও ‘উৎসাহ’ জুগিয়েছেন, যা দুষ্কর্মে ‘সহযোগিতার’ মতো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। রায়ে দ্বিতীয় অভিযোগ এনে তাকে ১৫ বছরের সাজা দেয়া হয়। এবং অন্নান্য অভিযোগের কারনে তার ফাঁসির রায় কার্যকর হয়। ঢাকা মিরপুরের স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসাবে তাঁর নাম চিরকাল উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। কিন্তু এই মহান কবির বাংলাদেশে এক বোন ছাড়া কোন আত্মীয় নেই এবং তার বোন মোমেনা রক্ষণশীল পরিবারের গৃহ বধু থাকায় মেহেরুন্নেসাকে নিয়ে আমাদের দেশে উল্লেখ যোগ্য কিছুই করা হয়নি। মিরপুরের সাংস্কৃতিক কর্মীদের আন্দলোনের ফলে কিছু কাজের আশ্বাশ দেয়া হয় কিন্তু তা এখনও বাস্তবে রুপ নেয়নি। তাই মিরপুরের তথা সচেতন মানুষের দাবি যত দূরত সম্ভাব মেহেরুন্নেসা এর নামে মিরপুরের বা বাংলাদেশের যেকোন বিশেষ একটি স্থাপনার নামকরন করার। আমরা নতুন প্রজন্ম বিশ্বাস করি বাংলাদেশের প্রথম শহীদ মহিলা কবি মেহেরুন্নেসার নামে স্থাপিত হবে স্মৃতিস্তম্ভ, তার নামে নাম করন করা হবে রাস্তা, ব্রীজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনার। তাকে নিয়ে নির্মিত হবে চলচ্চিত্র, আয়োজন করা হবে র্যালি, সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামসহ সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। লেখা হবে গল্প, কবিতা, উপন্যাস এই আমাদের প্রত্যাশা।
* রিয়াজ মাহমুদ মিঠু , সংগঠক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা, mithu.pothik@gmail.com