ডেস্ক রিপোর্ট
একাদশ সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পর টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ইতোমধ্যেই ৪৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছে। মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথের পরই শুরু হবে নতুন সরকারের যাত্রা।
নতুন সরকারের কাছে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা কী-এ নিয়ে বাংলানউজের সঙ্গে কথা বলেছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা। তারা বলছেন, দেশের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে কিন্তু দেশে দুর্নীতি কমছে না। রয়েছে ব্যাংক খাতে নৈরাজ্য। সড়ক-মহাসড়কেও নৈরাজ্য কমেনি মোটেও। তবে এরমধ্যেই অনেক উন্নয়ন হয়েছে দেশের। সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহতও রয়েছে। এখন প্রয়োজন সুশাসন। সুশাসনের নিশ্চয়তা এলে দেশ এগিয়ে যাবে।
তারা জানিয়েছেন, যখন দেশের একের পর এক হরতাল চলছিলো, জালাও-পোড়াও হচ্ছিল তখন দেশ ও দেশের অর্থনীতি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিলো। কিন্ত ওই সময়ের প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও দেশ এগিয়ে গেছে। দেশের প্রবৃদ্ধি কমে যায়নি। দেশের দুর্দিনে রফতানিমুখী শিল্পগুলো সব থেকে বেশি অবদান রেখেছিলো। এসব প্রাইভেট কোম্পানির কারণে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা থেমে থাকেনি। এখন সময় এসেছে সামগ্রিকভাবে দেশকে আরও উন্নত স্থানে নিয়ে যাওয়ার।
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আলী নূর বাংলানিউজকে বলেন, আমরা নতুন বছরে নতুন সরকারকে স্বাগত জানাই। পাশাপাশি নতুন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে দেশে যেন সুশাসন প্রতিষ্ঠা হয়। দেশে এখন সুশাসনের বড়ই অভাব। এই অভাব আমাদের চরমভাবে ভোগাচ্ছে। যার কারণে বিভিন্ন খাতে নৈরাজ্য থামেনি। এটার একটা শৃঙ্খলা দরকার। সড়কের অবস্থাও করুণ। সেখানে নৈরাজ্য চরম আকার ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রাইভেট কোম্পানিগুলোকে মূল্যায়ন করতে হবে। যাদের কারণে হরতাল-অবরোধের মুখেও রফতানি থেমে যায়নি। রফতানি হয়েছে, দেশ অর্জন করেছে বৈদেশিক মুদ্রা। প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রীত্ব পাওয়া সবার কাছে সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা থাকবে আমাদের।
ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সাবেক সহ-সভাপতি ও মহানগর দোকান মালিক সমিতির নেতা মো. হেলালউদ্দিন টেলিফোনে বাংলানিউজকে বলেন, যেহেতু মন্ত্রিপরিষদে নতুন অনেক মুখ এসেছে। তাই তাদের কাছে আমাদের দাবি থাকবে দেশে যেন ব্যবসায়ীক পরিবেশ থাকে, বিনিয়োগের একটা ভালো পরিবেশ থাকে। যেখানে ঘুষ, দুর্নীতি, প্রতারণা থাকবে না। সবাই যার যার অবস্থান থেকে সম্মানের সঙ্গে ব্যবসা বা কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারবেন।
এদিকে মন্ত্রিপরিষদে নতুন মুখকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন শিক্ষাবিদরাও। তাদের মতে, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর সঙ্গে সঙ্গে গবেষণাকেও অগ্রাধিকার দিতে হবে। তবেই একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিকভাবে উন্নত জাতি পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে লেখক ও কলামিস্ট অধ্যাপক জিএম তরিকুল ইসলাম বলেন, উন্নত জাতি গড়তে শিক্ষাখাতকে প্রাধান্য দিতে হবে, নতুন সরকারের কাছে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি শিক্ষিত জাতি গঠন করতে পারে। পাশাপাশি প্রত্যাশা থাকবে তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গবেষণাকেও গুরুত্ব দেবে। যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থী পরীক্ষণ ও পর্যবেক্ষণের সুযোগ পায়।