ফিচার

করোনা আবর্তে মর্ত-আকাশ-পাতাল

তাজনাহার মিলি

মহারানী করোনা। মহামারী। অতিমারী। করোনাকে নিয়ে আজ সারা পৃথিবীতে আতংকের সময় ৮ মাস। বাংলাদেশে ৫ মাসে পড়েছে। মনুষ্য জগত/প্রাণি জগতে আলোড়ন/ভয় ব্যাপকতা পেয়েছে। তিনি হাটছেন। দৌড়াচ্ছেন। গ্রাম, শহর, নদী-নালা, খাল বিল পেরিয়ে দেশ-দেশান্তরে। আহা! না জিরিয়ে আত্মবিশ্বাসের জোড়ে ব্যাপক আতংক ছড়িয়ে দাপাচ্ছেন। বুদ্ধিমান প্রাণী মানুষ তার আগমন/অবস্থান ঠেকানোর চেয়ে আতংকিত।
আমার জানা ও দেখা বিষয় প্রসঙ্গক্রমে লিখছি।
এক: ২৭ জুন ২০২০, কোয়ান্টাম-এর যশোর শাখা অফিসে ঢুকে দেখি, আমার অনুজ মেহেদী। ফোনালাপে জানলাম খুলনায়, করোনা আক্রান্ত এক রোগী মারা গেছেন। যশোরের খড়কি গোরস্থানে দাফন হবে। উল্লেখ্য কোয়ান্টাম কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গঠিত করোনা আক্রান্ত মৃতদের সৎকার কমিটির সদস্য। তাই এই কয়মাসেও ১৬ জনের দাফনের কাজে জড়িত ছিল।  বিচিত্র ঘটনা আমায় অত্যন্ত মর্মাহত ও আবেগতাড়িত করেছে। কিন্তু কিছু লোক আপত্তি করছে গোসল/দাফন করা যাবে না। মৃত ব্যক্তি ওই এলাকার। অপরাধ, করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু।
দুই: সাতক্ষীরার কলোরোয়ায় জন্ম কিন্তু ঢাকায় বসবাসরত উচ্চপদে কর্মরত অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৮৫ বছর বয়সে মারা যান। ছেলেমেয়েরা প্রবাসী। অনেক দিন স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিজ গ্রামে শেষ শষ্যায় ঘুমানোর একান্ত বাসনা করেন। গ্রামবাসীদের আপত্তি সারাজীবন উচ্চপদে থাকাকালীন অবস্থান করে অত্যন্ত সৎ কর্মকর্তা গ্রামের জন্য কিছু করে যাননি। করোনা আক্রান্ত হয়ে বৃদ্ধজনিত মৃত্যু। তাই জনগন কলোরোয়ায় মাটি দিতে দেবে না। বাধ্য হয়ে কোয়ান্টাম পুলিশ/ প্রশাসন মিলে দাফন সম্পন্ন হয়।
তিন: বয়স্ক এক ভদ্রলোক করোনায় আক্রান্ত হয়ে চির অচেনা রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন। ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রী সে কথা জেনে ফেলে পালিয়ে গেছেন। অথচ ভদ্রলোকের দুবোন ছুটে মৃত ভাইয়ের কফিনে ঝাপিয়ে পড়েন। করোনা আমার ভাইকে কেড়ে নিয়েছে। তাতে কি? তাকে আমরা ভালবেসে চির বিদায় দেব। সে এক মর্মান্তিক দৃশ্য।
চার: ঈদুল ফিতরের পূর্ব রাতে মেহেদীর কাছে ফোন আসে। ঢাকায় এক বৃদ্ধ ভদ্রলোক মারা গেছেন। তার মেয়েও ডাক্তার ভদ্রলোক হার্টের পেসেন্ট ছিলেন। কিন্তু সবাই ভাবছেন করোনা আক্রান্ত মৃত। তাই দাপন কাজে বাধা। রাত থাকতে উঠে খুব ভোরে বেনাপোলে পুলিশ নিয়ে মেহেদীদের দাপন সেরে ঈদের নামাজ না পড়ে বেলা বরোটায় বাড়ীতে ফিরলে। ওর চার বছরের মেয়ে মানহা বাপকে জড়িয়ে ধরে। খুশীতে আটখানা।
পাঁচ: আমার আব্বার বাড়ী থেকে ৫০০ গজ দূরে বছর ষাটের আব্দুল কাদের রঙ মিস্ত্রি বাস করতেন। অমায়িক সদালাপী কাদের গত দুবছর ধরে মলদ্বারে ক্যান্সার আক্রান্ত ছিল। আমি মাঝে মাঝে ওকে ধরে এক হোমিওপ্যাথি ডাক্তার কোরবান আলীর কাছে নিয়ে যেতাম বছর খানিক ধরে। সবার মনে থাকার কথা রোযায়, কাল বৈশাখী ঝড় আম্পানের কথা। আব্দুল কাদের অবিবাহিত ছিলেন। ভাইপোকে নিজ ছেলের মতই লালন পালন করেন। আগের দিন রাতে জানা যায়। ছেলেটি করোনায় আক্রান্ত। ফলত পুলিশ এসে ওদের বাড়ীর সামনে লকডাউন সিলগালা করে যায়। ছেলেটিকে পুলিশ নিয়ে যেতে এলে ওর বাবা/ মা চাইছিল ছেলে ওদের বুকে মারা যাক। পুলিশ মানবে না। বিডিআর /পুলিশ মিলে ছেলেটিকে জোর করে তুলে নিযে যায়। টিপটিপ বৃষ্টির মাঝে ভয় পেয়ে রাতেই আব্দুল কাদের পরপারে চলে যান। একে তো রোজা, সাথে আম্পানের তান্ডব দুদিন ধরে। পাড়ার মানুষ আতংকিত। ওর ভাইপো করোনায় আক্রান্ত। কাদের যদি আক্রান্ত হয়। ঝড়-বৃষ্টিতে সারা এলাকার হাজার হাজার লোকের একজন পাড়া-পড়শী এগিয়ে এলোনা। শোক করলোনা। কাফন-দাফন দিবে না। শেষ পর্যন্ত মেহেদীর নের্তৃত্বে কোয়াণ্টামের কয়জন মিলে কাফন-দাফন করে। আরও বেদনার বিষয় যে, সপ্তাহখানিক পরে টেস্ট রিপোর্টে এলো করোনা আক্রান্ত নয় ছেলেটি। ও ছোট থেকে লেদ মেশিনে কাজ করতো। সম্প্রতি বুকে ব্যাথা, সাথে জ্বর/কাশি সেজন্য অলিখিত আদেশ জারী করোনা আক্রান্ত, লকডাউন করা। ঝড়ের তান্ডবের সাথে মানুষের নিমর্ম মানবতার বিপন্নতা দেখে ডুকরে কেঁদেছি। ছুটে গেছি বাজার করে। তাতেই সবাই আতংকিত। মৃত্যু মানে তো নিশ্চলতা, সামাহীন নৈঃশব্দ। তাহলে মৃত মানুষের তো পচার পর অসুখ ছড়াতে পারে। কিন্তু সাথে সাথে জানায়/কাপন/দাফনে তো সংক্রমন হওয়ার কথা নয়।
ছয়: জুন মাসের ১৩ তারিখে। আদ্ব দীন হাসাপাতালের ডাঃ মিনহাজ উদ্দিন, চুক্ষবিশেজ্ঞ করোনা আক্রান্ত। তা প্রচারিত হওয়ার পর পুলিশ/ম্যাজিষ্ট্রেট যেয়ে যশোর শহরের কেন্দ্রস্থলে জিপিও এর সম্মুখে ছয়তলা দুটি বাড়ী লকডাউন করছিল। মাইকিং হাতে। লোকজন নিয়ে, আমি উল্টোদিকের অনুরাগ টাইলস দোকানে ছিলাম। দুটি উচ্চতল ভবন লকডাউন পদ্ধতি অত্যন্ত ভীতিকর। ওই দুটি বাড়িতে হৃদয় অচল/অন্যান্য রোগাক্রান্ত /শিশু/বৃদ্ধ/বৃদ্ধাদের কথাও মাথায় রেখে সহনীয়/নমনীয় পদ্ধতি উদ্ভাবন ও প্রয়োগ অতি জরুরিভাবে বাঞ্চনীয়। তাই প্রশাসনের কাছে সহজ পদ্ধতি ও ব্যবহারের সামঞ্জস্য বজায়ে সদয় সিদ্ধান্ত, প্রয়োগে বিনীত অনুরোধ রাখছি।
করোনাউৎপত্তির মূল কারন ৮০ ভাগই অনুমিত কারণ জানা গেলে তার বিরুদ্ধে প্রতিষেধক আবিষ্কার ও নিয়ন্ত্রণ করা খুবই সহজ। কোভিড ১৯, করোনা ভাইরাস ডিজিজ  ২০১৯। উহানে প্রথম আক্রান্ত রোগী। রোগ সনাক্ত হয়। প্যান্ডেমিক বা অতিমারী। পাঙ্গেলিন। বাদুড় জাতীয় পাখি থেকে কঠিন রোগের উৎপত্তি। আক্রমণ। এটি নিউমোনিয়া জাতীয় তাই উহান দুরাগ্যে নিউমোনিয়া।
এ অসুখ 
৮০% শতাংশের ক্ষেত্রে মৃদু,
১৫% শতাংশের ক্ষেত্রে এ মাঝারী,
৫% শতাংশের ক্ষেত্রে তীব্র সাড়াশি আক্রমন এবং
২% শতাংশের ক্ষেত্রে মৃত্যু পথযাত্রী।
প্রতিদিন পৃথিবীতে প্রায় আটশত কোটির মধ্যে হতে সংখ্যা নিম্নরূপ :
এক: আত্মহত্যা ২৮০০-৩০০০ জন
দুই: ডায়াবেটিস ৪৫০০ জন
তিন: হার্টের অসুখ ও ক্যান্সারে ৩০০০ জন
চার: ডায়রিয়া ৮৫০০ জন
পাঁচ: সড়ক দূর্ঘটনায় ৪৫০০ জন
ছয়: টিবিরোগী ৪৬০০ জন
সাত: করোনায় সবোর্চ্চ ১০৮ জন ১০-০২-২০২০। করোনার সাথে বয়স/হার্টেও গোলমাল/কিডনির দূর্বলতা/ডায়বেটিসের আধিক্য যোগ হলেই ভয়ের।
হাত ধোয়ার অভ্যাস করা প্রয়োজন। রাস্তার যেখানে/সেখানে খাওয়া বন্ধ। কাশি-হাচি হলে সবোর্চ্চ  সাবধানতা অবলম্বন অন্যেও মধ্যে না ছড়ায়। সংক্রামন। তখন মাক্স পরা উচিৎ  নিজের ও অন্যেদেও স্বার্থে। ভাজ করে কনুই দিয়ে নাক মুখ ডাকলে সংক্রামিত হাত ব্যবহারে জীবানু ছড়াবে না। ব্যক্তিগত/নাগরিক/সামাজিক জীবনে সার্বিক সচেতনতা বাড়াবে ও যথাযথ পালনের দিকে সদয় দৃষ্টি নেয়া প্রতিটি মানুষেরই মানবিক প্রয়োজন।
০৪-০৭-২০২০ পর্যন্ত সারা বিশ্বে আক্রান্ত ১ কোটি ৮ লাখ ১০ হাজার।
মৃত্যু  ৫ লাখ ৯ হাজার ৯৯২ জন।
এরকম বহু সংক্রামক অসুখ আঘাত হেনেছে। যেমন :
(১)  এবোলা ভাইরাস ২০১৪ শতকরা ২৫% নিহত।
(২)  সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস ২০০৯-১০ শতকরা ১০% নিহত।
(৩)  অ্যাকিউস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম সার্স ২০০৩ শতকরা ১০% নিহত।
(৪)  ডেঙ্গু জ্বরে ২০০১-২।
তারপর ৩ জুলাই পর্যন্ত ভারতে ১২ দিনে ২ লাখ রোগী সনাক্ত। যুক্তরাষ্ট্রে দিনে ৫২ হাজার।

সতর্কতা  জরুরী: অসুখ সংক্রমন ঠেকানো। কিন্তু লক ডাউন অর্থনৈতিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ করছে। আগামী দিনগুলো অসুখের চেয়ে খাদ্য। অষুধের চাহিদা ও মূল্য পরিশোধ ক্ষমতা নিয়ে জরুরী পদক্ষেপ প্রয়োজন। খাদ্য বর্তমানে মুজদ থাকলে ও করোনা পরবর্তী দীর্ঘ মেয়াদী চ্যলেঞ্জ মোকাবিলায় পরিকল্পিত গঠনমুলক পদক্ষেপ সময়ের দাবী। সীমিত সম্পদ ব্যবহার করে দেশীয় সম্পদের মুনাফা অর্জন ও  সাধারণ মানুষের চাহিদা পুরণের উপায় বের করতে হবে। খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা সচল রেখে/সুস্থতার ব্যাপারে সচেতন থেকে বিশাল জনগোষ্টির খাদ্য নিরাপত্তা/পরিকল্পনা দূভির্ক্ষ মোকাবেলায় কাজ করবে।
আর্থিক/সামাজিক ক্ষতির পরিমাণ/প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ: 
এক: ভাড়া না দিতে পারায় ছাত্র/ ছাত্রীদের ট্যাংক/ল্যাপটপ ডাস্টবিনে। এখনো ৫০% ছাত্র/ছাত্রীরা টিউশনি করে খরচ নির্বাহ করে।
দুই: করোনা আক্রান্ত রোগী দেড় লাখ সনাক্ত।
তিন: পাট কল বন্ধ। পরিবহন সেক্টরে ঝিমিয়ে চলছে। সাথে আয় না বাড়লেও ১০ টাকার ভাড়া ২০  টাকা হচ্ছে।
চার: এ প্রসঙ্গে বাড়ীওয়ালা হওয়ার সুবাদে বিশাল জনগোষ্টির পক্ষে প্রমিজ করে বলছি। বিশ্ববিদ্যালয় চাকুরি করার সুবাদে গ্যান্টারের পাটাতনে অতি সহজে পাওয়া ব্যাংক লোন নিয়ে নিজ বাড়ির… । বেতন নিজের হাতে পাওয়ার আগেই ইন্টারেস্টসহ লোন ব্যাংকে জমা পড়ে। অথচ পাশ করা ছেলেরা টিউশনে চলছিল। মার্চ এপ্রিল মে/জুন ভাড়া না দিয়ে গ্যাস/বিদ্যুৎ পানি বিল না দিয়ে জোর করে চলে গেছে। দরজা ভেঙ্গেছে। পূর্ব নোটিশ ছাড়াই, ফলে নুতন  ভাড়াটে না আসা পর্যন্ত গ্যাস বিদ্যুৎ বিল আমার টানতে হবে। করোনা লক ডাউন না উঠলে মধ্যবিত্তের চলা অতি কঠিন।
পাঁচ: মধ্যবিত্তের আজ দরিদ্র/অতি দরিদ্র হচ্ছেন। পথে প্রান্তরে। ৩৬ শতাংশ মানুষ ঢাকা ছাড়ছেন। পেটে ভাত নেই। হাতে টাকা নেই। ছেলে মেয়ের স্কুলের বেতন/টিউশন ফি দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। বাচ্চারা স্কুলে না যেয়ে অতি মাত্রায় টিভি/ মোবাইলে ঝুকেছে ৯০% এর ক্ষেত্রে। এখনই তাই ভয় ছেড়ে অর্থনীতির প্রাণ মধ্যবিত্ত বাচাতে। নিজেদের সজাগ/সচেতন হয়ে করোনা গ্রুপ হতে হবে। নাহলে করোনায় মৃত্যুহারে চেয়ে দুর্ভিক্ষের/মৃত্যুও কোটি গুন হবে। উচু আকাশে উঠার স্বপ্ন  ছেড়ে এই মূহুর্তে রাষ্ট্রযন্ত্রকে টেবিল/ঘর বড় করে সবাইকে জায়গা দিতে হবে। স্বস্তিতে  ডাল ভাত খেয়ে জীবন কাটানো/প্রয়োজনীয় অষুধ পাওয়ার সঠিক বাস্তবমুখী। নমনীয় জরুরী নির্দেশ না প্রয়োজন।
উহানের পেঙ্গু লিন/এবেলা আফ্রিকায় বাদুড় থেকে উৎপত্তি, নিউমোনিয়া জাতীয় অসুখের। আমরা বাংলাদেশীরা মুরগী/কোয়েল পাখি এখন না পুড়িয়ে ভাল করে ধুয়ে মশলা দিয়ে সিদ্ধ করে খাবো।
ফ্রিজে না রেখে সরাসরি খেলেই ভাল হয়। তাছাড়া বার বার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ব্যকটেরিয়ার জন্ম/গ্রোথ  হতে পারে।
বিশ্বময় মানুষ আজ চরম অনিশ্চিয়তা ও উদ্বেগের মধ্যে নিমজ্জিত। এ মুহুর্তে উদ্ধার পাওয়ার চেষ্টা করা।  বিশ্ব স্বাস্ত্য সংস্থার বার্তায় ২য় বার নতুন করে করোনা আক্রমণ  হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে। তাই মৃতের সংখ্যা ঠেকাতে টিকা/অষুধ  আবিস্কার  এখন অতি জরুরি। মার্চ-এ আমেরিকায় টিকা দিয়ে প্রাথমিক পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। যদি এ টিকা সত্যিই আবিস্কৃত হয়। বিনামূল্যে। নাম মাত্র মূল্যে তা সর্বসাধারণের মধ্যে বিতরনের ব্যবস্থা সরকারকে নিতে হবে।
করোনা অষুধ মার্কিন খাদ্য ও অষূধ  প্রশাসন এবং বিস্বাস এর অনুমোদন প্রাপ্ত অষুধ ১৭০টি দেশে ব্যবহারের ব্যবস্থা নেয়া। আশ্চর্যজনক খবর বিস্বাসে সম্মেলনে প্যান্টেন্ট পুলিং এর সুপারিশ আছে। “ট্রিপস ট্রেড রিলেইটেড অ্যাসপেক্ট অব ইনলেলেক চয়াল প্রপাটি রাইটস-এ কোভিড ১৯ সংশ্লিষ্ট অষুধ/টিকা/ইনজেকশন হবে” পাবলিকের সম্পদ চীন/ইইউ সমর্থন করে। বিশ্বমোড়ল আমেরিকা, যুক্তরাজ্য সম্মত হয়নি। সারা পৃথিবীর যেসব দেশ পাবলিকের সম্পদ হবের পক্ষে সকল দেশ কার্যকর/প্রয়োজনীয় জরুরি অষুধ তৈরি করতে পারবেন। বাংলাদেশের স্থানীয় অষূধ নির্মাতা কোম্পানীগুলো একাজে দ্রুত সফলতা বয়ে আনবেন ।

অষুধ:
(১) বৃটিশ বিজ্ঞানীরা দীর্ঘ মেয়াদী সুরক্ষা ভ্যাকসিন তৈরির প্রক্রিয়ায় কর্মরত। সারা গিলবাট বিশ্বখ্যাত বিশেষজ্ঞ। ভ্যাসসিন তৈরিতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দলের নের্তৃত্বে আছেন। মধ্য জুলাইয়ে ফল জানা যাবে। তৃতীয় পর্যায়ে দক্ষিণ আফ্রিকা/ ব্রাজিলে বৃহৎ আকারে স্বেচ্ছাসেবীদের উপর প্রয়োগ শুরু হয়েছে।
(২)  মার্কিন ফার্মামিউটিক্যাল জায়ান্ট ফাইজার ও জার্মান কোম্পানী বায়োএনটেকের তৈরি করোনার সম্ভাব্য একটি ভ্যাকসিনের পরীক্ষায় ইন্শাআল্লাহ ইতিবাচকতা পাওয়া গেছে।
আশ্চর্যজনক খবর:
করোনার মধ্যেও কিছু আশ্চর্যজনক খবর আছে। ২০৩৬ পর্যন্ত রাশিয়ার মসনদে থাকার অনুমোদন তৈরি করলেন ভ্লদিমির পুতিন। রাশিয়ার সংবিধানে টানা ২য় বার প্রেসিডেন্ট থাকার অনুমোদন। সে অনুযায়ী এবছর ক্ষমতা ছাড়ার কথা ছিল। অথচ তিনি সময় তৈরি করলেন।
ত্রিপুরা সরকার বেঁচে থাকো মহানুভবতায়। ভারতের ভিন্ন মাত্রা যোত করেছে। ত্রিপুরা সরকার করোনা এড়াতে বিনা মূল্যে লেবু আনারস সরবরাহ করছেন। পুষ্টি যেমন শরীরে কাজ দেবে। তেমনই প্রতিষেধক এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে। দেশের প্রাণ কৃষকরা উৎপাদিত ফলের মূল্যে পেয়ে তারা নতুন ভাবে আগ্রহন্বিত হবেন। প্রতি সপ্তাহে সরকার ৩ লাখ আনারস ও ৬ লাখ লেবু সংগ্রহ করবে।
করোনা ফেয়ারওয়েল পার্টি:
ভলাটাভা নদী। টলটলে সুন্দও পানি ভরা নদী। সে নদীর তীরে সুন্দর শহরের পাশে নদীর উপর চালর্স ব্রিজ। বয়স তার ১৫০ বছর। চেক প্রজাতন্ত্রের বৃহত্তম শহর প্রাগ। অনেক দিন লক ডাউনে ছিল শহরটি। সরকার ঘোষনা না দিলেও সাহসী নাগরিকরা এগিয়ে এসে করলো পার্টি। আনন্দ যাত্রা হাজার খানিক মানুষের মিলিত আনন্দময় অনুষ্ঠান তারা করোনা ভাইরাসের মুত্যুকে সেলিব্রেট করেছে। এশহরে আক্রান্তের সংখ্যা ২৩৬৩ জন। প্রায়ই সবাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ভাইরাসের কারণে আমরা বিচ্ছিন হবো, একজন অন্যজনের হাত ধরবো না। প্রিয় বন্ধুদের সাথে সান্ডউইচ শেয়ার  করবো না। এটা হতেই পারে না।
তাই বুদ্ধিমান মানুষ এর প্রাণের আনন্দযাত্রা। মৃত্যু অবধারিত। মরার পূর্বে বার বার মরতে রাজি নই। এ শ্লোগানে তারা একত্রিত। তথ্য: ইটস পার্টি টাইমস।
মৃত্য সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে। আতংকিত মনুষ্য সমাজ এখন বিভ্রান্ত। নানারকম প্রতিদিন করোনা আক্রান্ত ভয়-ভীতি আমাদেও এখনই থামাতে হবে। সমস্যা প্রচুর। নির্দেশিকা বানানো খুউব কঠিন। তারপর অভিজ্ঞ আন্তরিক পরীক্ষক। চিকিৎসক বৈজ্ঞানিক নিবীড় আত্মনিবেদন সঠিক নির্দেশনা। করোনা আয়ত্বে আসবেই। অস্বত্তির এ যন্ত্রণায় আমরা সবাই ক্ষত-বিক্ষত। অন্তঃমুখীরা নিজের মত কাজ করে বুকের মধ্যে ঢেকির না উঠলে ও অন্যরা বোঝে না। আমার এ বিষয়ে কাজের অভিজ্ঞতা  কম কিন্তু আমি আশাবাদী  স্বপ্রবাজ। সবাই মিলে মিশে একসঙ্গে পারস্পারিক ভালবাসায় আবদ্ধ হয়ে এই অতি অমানবিক রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করে সফল হতেই হবে।
মনে রাখতে হবে যে, আমাদের এ অঞ্চলে ফেব্রুয়ারি মার্চ বসন্ত রোগের/মুরগীর অসুখ নিত্য ঘটনা। বর্ষায় পানি বাহিত অসুখ/ইনজেকশন/টাইফয়েড/ডায়েরিয়া হয়ই। সাথে করোনা মহারানী অতি মারী অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসায় অবশ্যই প্রয়োজন। টেম্পারেচার নিয়ন্ত্রন অবশ্যই প্রয়োজন। হাত ধুয়ে ফেলবো বার বার। হাইজন মানতে হবে। জীবানু বেশি থাকে মোবাইলে। বাচ্চারা স্কুল/কলেজ নেই বলে একেবারে সেটে আছে। হাত ধুয়ে খেলে ৯০ শতাংশ ইনফেকশন শরীরে ঢুকতে বাধা দেয়। পানি পরিস্কার  খান। অন্তত ৪ লিটার প্রতিদিন। ফ্রিজের পানি বাদ দিন। গরম পানি/আদা/মধু/রসুন/লবঙ্গ/দারুচিনি খান।

করোনা আসার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার পর ছাত্র/ছাত্রী/কর্মকর্তা/কর্মচারিদের অনুপস্থিতি আমায় বিমর্ষ করে। শিল্পীর চিত্রলিপি সবুজ জীবন্ত ক্যাম্পাস আবারো বিভাগে/অফিসে/স্বাস্থ্য কেন্দ্রে/ক্যাম্পাসে ফিরে আসুক। সেজে উঠুক। আনন্দে মায়াবী অঙ্গন ভরে উঠুক।

* উপ-রেজিস্ট্রারার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, সাভার, ঢাকা।

আরও দেখুন

এ বিষয়ের আরও সংবাদ

Close